ভালোবাসা পাওয়ার চাইতে ভালোবাসা দেওয়াতেই বেশি আনন্দ।

Wednesday, July 1, 2020

ছাত্রী বউ

ভালোবাসার গল্প, প্রেমের গল্প, ভালবাসার গল্প, love story, valobashar golpo
বউকে কখনো প্রাইভেট পড়াইছেন কেমন লাগে জানেন বা অভিজ্ঞতা আছে??
এই মনে করেন যে, আমি তাকে মারলাম একটু তখন সে বলবে 'আমি রান্না করবো নাহ, আমি আপনাকে জড়িয়ে ঘুমাবো নাহ, আমি আর সকালে কফি বানাবো নাহ'
আমি তখন ভাবলেশহীন ভাবে বলি, কিন্তু পড়ার সাথে সংসার জীবন কেন আসবে?
বউ তখন বলবে, আমিও ইচ্ছামতো রান্না করবো। যেমনটা ইচ্ছে খাওয়া যাক আর না যাক....
কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে কিছুটা মাথা হেট করে ভাবতে বসি, এ'কি যন্ত্রণা তে পড়লাম রে বাবা। আবার কিছু বলারও নেই কারণ মায়া মানে আমার স্ত্রী হচ্ছে আমার ছাত্রীর বড় বোন। সেদিক থেকে সে আমার কাছে বিয়ের আগে না পড়লেও বিয়ের পর পড়বে বলে যিদ নিয়ে বসলো, ও'মা তাকে পড়াতে এসেই এইসব কাণ্ড শুরু হলো...
তাহলে সেদিনের কথা শুনুন, সামনে তার ইয়ার ফাইনাল পরিক্ষা, তার বান্ধবিরা সবায় ভালো রেজাল্ট করবে। সে'কি ফেল করবে নাকি? এজন্য তার দাবী আমাকে পড়াতে হবে। আমিও অমত করিনি। শতহোক ভালো রেজাল্ট করলে আমার সম্মান তো বাড়বেই নাকি। প্রথম দিনের কথা, আমি সুন্দর করে বিকালে বসে আছি সে কিছু বই নিয়ে এসে আমাকে বলল,
-- এগুলো পড়িয়ে দিন।
- তুমি পড় বুঝতে না পারলে আমি বুঝিয়ে দিচ্ছি।
- কিছুই বুঝিনা! আপনি বুঝিয়ে দিন।
- আরে আগে নিজে তো শুরু করবে নাকি। নাকি রিডিং পড়ে শোনাতে হবে বাচ্চাদের মতো।
- আমাকে কেন পড়াবেন। আমার ছোটোবোন কে তো খুব পড়াতেন। ও তো আমার থেকে বেশি সুন্দর এজন্য। আমি কে আমাকে কেন পড়াবেন।
- ওই ন্যাকামি রাখো পড়ো। পড়া ছাড়া বাড়তি কোনো কথা বলবেনা। পড়াই মনোযোগ দাও।
- কিভাবে পড়বো আপনি তো কিছুই বলে দিচ্ছেন না।
.
১০ মিনিট দুনিয়ার কথা বলার পর অন্য বই নিয়ে বসেছে। ছোট্ট একটা সিম্পল ম্যাথ করিয়ে দিয়ে একই সুত্রের অন্য একটা অংক করে দিতে বললাম আর ঠিক সেই মুহূর্তেঃ-
- এই অংক তুমি যদি না পারো এই স্কেলের মাইর দেবো।
- আপনি পারবেন আমাকে মারতে? অবশ্য পারবেন কারণ আপনি তো আমাকে ভালোই বাসেন না। এজন্যই পারবেন। আমিই কেবল ভালোবাসলাম জীবনে কিছুই পেলাম না।
- আরে ধুর! ওই আগামীকাল থেকে অন্য টিচার বাসায় ডেকে এনে পড়বা। আমি পারবোনা পড়াতে।
- তা পারবেন কেন। এখুনি একটা সুন্দরি মেয়ে পড়াতে বলুন ঢ্যাংঢ্যাং করে চলে যাবেন পড়াতে। আমি তো সুন্দরি নই তাই না।
মায়া এসব হাবিজাবি বলে মাথাটা দিলো খারাপ করে রাগ করে চলে এলাম। রুমে এসে ঘুমিয়ে পড়লাম। কারণ এক সেকেন্ড ওর কাছে থাকলে দুনিয়ার কথা বলে মাথা খাবে। এই স্টুপিড কে কেন বিয়ে করেছিলাম শুনবেন??
-
ছাত্রীর মা আমাকে অসম্ভব স্নেহ করেন। তার মেয়েকে সুন্দর করে পড়ানোর কারণে আমাকে সে সবসময় এক্সট্রা ভালোবাসা দিয়ে খুশি রাখে। আর আমিও তার স্নেহ পেয়ে আনন্দিত। তার দুইটা মাত্র মেয়ে। বড় মেয়ের নাম মায়া আর ছোটো মেয়ে ছায়া। ছায়া এবার এস এস সি দেবে খুব-ই ব্রিলিয়ান্ট স্টুডেন্ট। দেখতেও খুব সুন্দরী। এদিকে আঙ্কেল থাকেন ঢাকার বাইরে খুব কম আসেন বাসাতে। আন্টিই সব দেখাশোনা করেন। বাসায় যখুনি ভালো কিছু রান্না হয় সবার আগে আমাকে দাওয়াত দেন। বা কোনো বিশেষ দিনে আমাকেই আগে ডাক দেন।
তো একদিন আঙ্কেল আন্টি আমাকে ডেকে বললেন - মেঘ তোমাকে একটা কথা বলবো আমরা ভেবেছি আশাকরি তুমি কথাটা রাখবে।
- জ্বি আন্টি অবশ্যই আপনি বলুন।
- আমরা জানি তোমার বাবা-মা নাই। তুমি ফুফুর কাছে বড় হয়ছো আর সেই ফুফুও তোমাকে তেমন খোঁজখবর রাখেনা। তোমার গার্ডিয়ান বলতে এখন তুমি নিজেই। তাই কথাটা তোমাকেই বলছি। আমাদের বড় মেয়ে মায়ার সাথে আমরা তোমার বিয়ে দেবো ভেবেছি তোমার কোনো অমত না থাকলে আমরা বিয়ের কাজ শুরু করবো আর তোমাদের থাকার জন্য আলাদা ফ্লাটের ব্যাবস্থা করবো।
- আন্টি আমি আপনাকে মায়ের মতো দেখি আমার মায়ের অভাব আপনি কিছুটা পূরণ করেছেন। আপনি যেহেতু এটা ভেবেছেন নিশ্চই আমার মঙ্গলের কথা ভেবে। তাই আমার কোনো আপত্তি নেই। আপনি যা ভালো মনে করেন তাই করুন।
.
তারপর আর কী আলাদা একটা ফ্লার্ট পেলাম আর সাথে পেলাম চরম লেভেলের অভিমানী এক বউ। বিয়ের আগে মায়ার সাথে আমার তেমন কোনো বনিবনা ছিলোনা। তবে জানতাম সে ছায়ার সাথে ডেইলি অভিমান করতো আর নে খেয়ে থাকতো। ঠিক তেমন হচ্ছে এখন আমার সাথে!
.
ঘুম ভেঙ্গে উঠে ছাদে কিছুটা ব্যায়াম করে ভাবলাম নাস্তা করি। মায়াকে বললাম
- একটা চা দেবে??
- নাহ!
- না কেন??
- বানিয়ে খান আমি দিতে পারবোনা।
- তোমার কিসের এতো ব্যস্ততা শুনি।
- আমি পড়ছি আর তাছাড়া তখন আমাকে না পড়িয়ে চলে গেলেন আবার নিজে ঘুমিয়ে এলেন মনে নেই।
- কেন তুমিও কী আমার সাথে ঘুমাতে চাইছিলে?
- বলবো কেন বুঝতে পারেন না।
- না আমি পেটের কথা বুঝিনা।
- থাক বুঝতে হবেনা। চা দিতে পারবোনা।
---
-
অগত্যা সোফাতে বসে টিভি দেখছিলাম তখন আবার মায়ার কথাবার্তা।
- ওই আপনার কী কানে প্রবলেম??
- কেন?
- এতো সাউন্ড কেন টিভিতে কম দিতে পারেন না??
- ওহ আচ্ছা কমই তো।
- ওহ কম। তার মানে আমি মিথ্যে কথা বলছি। আমি তো এখন মিথ্যেবাদীই হবো। আমি তো অসুন্দর আমাকে পড়ানো যায়না। ঘুমানোর সময় ডাকা যায়না, টিভি দেখার সময় মুখের কথা বলাও যায়না।
- ওই ওই! সবসময় কী ঝগড়া করার জন্য গলার ভেতর চুল্কাই? তুমি না পড়ছিলে এখন পড়া বাদ দিয়ে আমার পেছনে পড়লে কেন? আর আমি একবারো বলছি তুমি অসুন্দর। নিজেকে নিজেই অসুন্দর বলো আর আমাকে দোষ দাও না।
- হ্যাঁ সেটাই আমি তো ঝগড়ুটে। আমার কণ্ঠে বিষ। আমি তেতো করে কথা বলি, আমি তো মিষ্টি করে কথা বলতে পারিনা।
- বুঝছি তুমি এখানেই থাকো আমি গেলাম বাইরে আর হ্যাঁ তোমার ছোটোবোন আমার ছাত্রী ছিলো তুমি ছিলে না। আর সে তোমার থেকে অন্তত বেশি ব্রিলিয়ান্ট তুমি নিজেও জানো। অন্যের সাথে তুলনা না করে মন দিয়ে পড় কাজে লাগবে।
--
এই বলে মায়ার সামনে দিয়ে হনহন করে বেরিয়ে পড়লাম। আসার সময় একবার তাকিয়ে ছিলাম চোখদুটো লাল টকটক করছে যেন দুনিয়ার রাগ তার চোখে এসে জড়ো হয়েছে। তবুও বাইরে এলাম।
..
সন্ধ্যা নাগাত বাড়ি ফিরলাম, মায়া আবার একা থাকতে পারেনা বেশিক্ষণ। আমার ধারণা ঝগড়া না করলে ওর পেটের ভাত হজম হয়না। এজন্য বেচারি সারাক্ষণ লেগেই থাকে আমি আর ঝগড়া কই করি? কেবল মাত্র প্রতিউত্তর করি। নাহলে ঝগড়া জমবে কিভাবে?
..
রাতে খাবার টেবিলে বসে আছি। আর ওদিকে মায়া পড়ার টেবিলে বসে বসে ঝিম মারছে। পড়ছে নাকি ঘুমাচ্ছেনা বোঝা যাচ্ছেনা। এজন্য সামনে থাকা স্টিলের চামচ দিলাম মেঝেই ফেলে তাতেই কাজ হবে। কয়েক ন্যানোসেকেন্ড এর মাঝে মায়া এসে হাজির।
- কী ভাঙলেন?
- কই?
- আমি কী কালা যে কানে শুনিনা। মাত্র শব্দ হলো যে।
- আরে কই তুমি পড়ছিলে না এজন্য শব্দ মনে হলো। হয়তো পাশের ফ্লাটে।
- পাশের ফ্লাটের শব্দ আমাদের বাসায়!
- যাই হোক খাবার কই খুধা লাগছে।
- আজ খাবার নেই।
- কেন?
- আজ উপোষ ডে!
- মানে??
- মানে আজ খাবার নেই। না খেয়ে থাকতে হবে। আর না হলে নিজে রান্না করে খাবেন। এখন যাচ্ছি আমার অনেক পড়া বাকি।
- রাখো তোমার ছাতার পড়া। আমার খুধা লাগবে ভাত দাও।
- পারবোনা, যখন আমাকে কথা শুনাইছিলেন তখন মনে ছিলোনা??
- কখন??
- এখন আবার বলে কখন না! বাসা বাসা থেকে বের হবার আগে, ঘুমাতে যাবার আগে, আমি তো ব্রিলিয়ান্ট না। যে ব্রিলিয়ান্ট তার হাতের রান্না খাবেন আমি রাঁধতে পারবো না।
- মায়া তুমি কিন্তু বাড়াবাড়ি করছো।
- করছিনা! আপনি করছেন ও বলছেন।
- আচ্ছা কি করতে হবে বলো??
- আমাকে সুন্দর করে বুঝিয়ে পড়াতে হবে। আর অন্যের প্রশংসা করা যাবেনা আমার বোন হলেওনা।
- আচ্ছা এক শর্তে।
- কি?
- পড়ানোর সময় স্কেল আমার হাতে থাকবে নাহলে নিজেকে স্যার স্যার মনেহয় না।
- আচ্ছা।
.
মায়াকে পড়াচ্ছি। সে কমার্স এর ছাত্রী তাকে আমি একটা হিসাব বিজ্ঞানের আয়-ব্যয় বিবরণী শেখাচ্ছিলাম। এবং লাভ-ক্ষতি কিভাবে নির্ণয় করতে হয়। কিন্তু সে এতোই স্টুপিড যে কিছুতেই বুঝেনা লাভ-ক্ষতি করার নিয়ম। বারবার বলি, সে বারবার ভুল করে। নিজে করিয়ে দেই তার ভুল করে। মেজাজ গেলো খারাপ হলে স্কেল দিয়ে দিলাম হাতের ডানাই দুইটা মাইর। এমনি বাচ্চাদের মতো ভ্যাঁ ভ্যাঁ করে কান্না শুরু করলো।
- ওই তুমিই তো বুঝতেছিলেনা তাই মারলাম। আর আমি না মেরে পড়াতে পারিনা। তোমার বোন কেও মেরেছি। বিশ্বাস নাহলে কল দিয়ে শুনে নাও। আর এখন তো তোমার শিক্ষক আমি, মারতেই পারি তাইনা??
কিসের কথা। কথা বলছেই না বরং কান্না করে ফ্লোর ভিজিয়ে ফেলে। টিস্যু যা ছিলো কাঁদছে আর ছুঁড়ে ফেলছে পুরো ঘরজুরে। এদিকে পেটে ভাত নেই। খিধেই পেট চোঁ চোঁ করছে অন্যদিকে বউ এর ঘ্যানঘ্যান কান্না উফফ অসহ্য।
--
ফ্রি হাতিয়ে কিছুই পেলাম না। আমি খাবো বলে আগেই সব ফেলে দিয়েছে আমি শিওর। কিচেনে রান্নার কোনো চিহ্নই নেই। কি যে করি ভাবলাম বাইরে যেয়ে খাবার নিয়ে আসবো না'কি। কিন্তু মায়া তো বাইরের খাবার খায়না আর আমাকেও খেতে দেয়না।
মাথায় একটা বুদ্ধি এলো। আমি মায়ার সামনে একটা একটিং করতে পারি। কারণ মেয়েটা আমাকে অনেক ভালোবাসে আমার যদি কিছু হয় সেই ভয়েই সে সবকিছু করবে এজন্য এই কাজটাই আমাকে করতে হবে।
...
..
মায়ার সামনে বসে মায়াকে বললাম।
- আমি জানিনা জীবনে কী পূণ্য করছি যে তোমার মতো লক্ষ্মী একটা মেয়ে পেয়েছি বউ হিসাবে। কিন্তু ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস আজ তোমাকে রেখে চলে যেতে হচ্ছে আমার। তোমাকে আমি অনেক ভালোবাসি মায়া। আমি যদি মারা যায় আমাকে তুমি মাফ করে দিও। আর রোজ আমার কবরটা দেখে এসো আমার আত্মা শান্তি পাবে আমার ভালো লাগছেনা মায়া (বলেই লুটিয়ে পড়লাম ফ্লোরে খুবই সিনেমাটিক ভাবে)
তারপর দেখি বউ দৌড়ে এসেই আমাকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ কান্না। কারণ মায়া জানতো আমি বেশিক্ষণ না খেয়ে থাকতে পারিনা। আমাকে জড়িয়ে ধরে দ্রুত রান্নাঘরে চলে গেলো তারপর দেখি খাবার নিয়ে চলে এলো। কি'রে একটু আগে পেলাম না। বউ যেয়েই কিভাবে পেলো? বউ আমার জন্য নুডুলস রান্না করে রেখেছে এদিকে ঘ্রাণ শুঁকে মনেমনে বলছি 'আহ বউ কী নাটক টাই না করলাম আমি'
সে নিজের হাতে আমাকে খাইয়ে দিচ্ছে আর বলছে
- আমি স্যরি আর কোনোদিন এমন হবেনা। আমি বুঝতে পারিনি। আমি আপনাকে ছাড়া থাকতে পারবোনা। আচ্ছা আপনার কী আরও কিছু খেতে ইচ্ছা করছে??
- হ্যাঁ চিংড়ী মাছ ভাজি। গরুর মাংস ভোনা ঝাল কম। খাসির মাংসের সিনার বিরিয়ানি আর রুই মাছের কালিয়া। রাঁধবেনা মায়া? (বলেই আবার শুয়ে পড়ার অভিনয় করলাম)
- হ্যাঁ হ্যাঁ অবশ্যই কিন্তু এতকিছু??
- আর সরিষা ইলিশ
..
বউ কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললো,
- আচ্ছা রাঁধবো। তাহলে বলেন কে বেশি ব্রিলিয়ান্ট? আর কে বেশি সুন্দরি?
- অবশ্যই তুমি। কারণ তোমার রাঁধুনির হাত সেই লেভেলের। আর তোমাকে দেখতে একদম ভরা জোৎস্না। তবে পড়তে বসতে চেয়োনা আর হ্যাঁ আমি আবার স্কেল ছাড়া পড়াতে পারিনা।
-- আমিও কিন্তু তাহলে রাতে আর রাঁধবো না। না খেয়েই স্যুটিং করতে হবে! কী ভাবছেন আমি বুঝিনা। বাংলা সিনেমা আমিও দেখেছি বুঝলেন! আপনাকে ভালোবাসি তাই কষ্ট দিতে চাই না। তবে আমাকে যে মেরেছেন এজন্য আজ আমার কাছে ঘুমাতে দেবোনা আজকে আপনি পাশের রুমে ঘুমাবেন। এমন মারামারি করা স্যার কে আমার কাছে ঘুমাতে দেবোনা, বুঝলেন মিঃ মেঘ ভাইয়া।
অতঃপর আমি একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়িয়া সবিনয় নিবেদন করিয়া কহিলাম "আমি যে স্কেল ছাড়া পড়াতে পারিনে"
______

No comments:

Post a Comment

comment

Contact Us

Name

Email *

Message *