ভালোবাসা পাওয়ার চাইতে ভালোবাসা দেওয়াতেই বেশি আনন্দ।

Saturday, February 11, 2017

এই মেয়ে কথা বলনা কেন?

valobashar golpo, ভালবাসার গল্প, প্রেমের গল্প, ভালোবাসার গল্প,
নতুন ভাড়া বাসায় উঠলাম কিছুদিন হলো...কিছুই ভালো লাগেনা...আগের বাসাটাকে ভুলতে পারছিলাম না...বন্ধুদের খুব মিস করছিলাম...সময় যেন কিছুতেই কাটতে চায়না...কি আর করার মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি সব কিছুর সাথে...

নতুন বাসায় উঠলাম আজ সাত দিন হয়ে গেলো কিন্তু আমি ঘর থেকে তেমন একটা বাহির হইনি...আমাদের বাসাটা তিন তালায়...বাসাটা অনেক বড় ধরণের...আমার অবশ্য বেশ পছন্দ হয়েছে...ভালো লাগছিল না তাই হাটতে হাটতে ছাঁদে চলে গেলাম..।

ছাদে আসলাম কিন্তু তেমন কাউকে দেখতে পাচ্ছিনা...পাশাপাশি আরো কয়েকটা ফ্লেট দেখতে পেলাম দূরত্ব তেমন একটা নেই বললেই চলে...ছাঁদে একটা দোলনা দেখতে পেলাম খুব সুন্দর করে ফোম দিয়ে সাজিয়ে রাখা হয়েছে...আশে পাশে কয়েক বার চোঁখ বুলিয়ে আমি বসে পরলাম দোলনাটিতে...আরাম দায়কই বলতে হবে, বসতেই ঘুম এসে যাচ্ছিলো তবে ঘুমানো আর হলোনা পিচকা মেয়ে একটির জন্য...বয়স কত হবে সাত আট বছরের মতো...কাছে এসেই শুরু করলো,,,
-আমার দোলনায় ঘুমাচ্ছেন কেন?
-উলে বাবা দোলনাটা তোমার? কই কোথায়ও তো তোমার নাম দেখতে পাচ্ছিনা...
-আমার পাপাকে চিনেন?
-কেন তোমার পাপা বুঝি বারাক ওবামা,ডোনান্ড ট্রাম্প যে তাদের চিনতে হবে...
-এনারা কে?
-এনাদের চেনার বয়স তোমার হয়নি এখনো...আগে তোমার পাপাকে চিনো ভালো করে তারপর উনাদের চিনতে পারবে বুঝলে পিচকা..!
-আমার নাম আফ্রা, আমাকে পিচকা বলে ডাকেন কেন... আমি আমার পাপাকে ডেকে আনবো?
-"হুম নিয়ে এসো, আসার সময় ফ্লাক্সে করে চা নিয়ে আসতে বলো তোমার পাপাকে যাতে করে গল্প করতে করতে কথা বলা যায়..."
-এই ফ্লেটটা আমার বাবার আর এই দোলনাটা আমার বাবা আমার জন্য বানিয়েছেন...
-হাই হাই এটা তোমাগো ফ্লেট আগে কইবাতো আফ্রা মণি...। হের লাইগ্গাইতো কই মাইয়ার গলার এতো তেজ কা...
নতুন উঠলাম ফ্লেটে না বুঝে এত কিছু বলা ঠিক হয়নি...তাই পিচকাটারে পটিয়ে ক্যাডবেরি চকলেটের লোভ দেখালাম...হুম আইডিয়া কাজে লাগছে পিচকা খুশি হয়ে চলে গেছে...যাওয়ার আগে বলে গেছে, দোলনায় যত ইচ্ছা ঘুমান...এতক্ষণ ভালোই লাগছিলো কথা বলতে...ঐই পিচকা আফ্রা চলে যাওয়ার পর পরিবেশটা আবার কেমন শীতল হয়ে গেলো...আমিও আর বেশিক্ষণ থাকলামনা নিচে চলে এলাম...।



আজও ছাঁদে বসে আছি তবে আজ যে পিচকাটার জন্য আসলাম সেই পিচকা মেয়েটিকে দেখতে পাচ্ছিনা এখনো...তার কথা রাখার জন্য ছাঁদে আসার আগে দোকান থেকে দুটো ক্যাডবেরি চকলেটও নিয়ে এসেছি..
আজ ছাঁদটাতে অনেক বেশি বাতাস বইছে,ঠান্ডা আর গরমের একটা অন্যরকম অনুভূতি অনুভব করছি, খারাপ না ভালোই লাগছে বিষয়টা উপভোগ করতে...।

ছাঁদের দোলনাটিতে পা দুলিয়ে বসে আছি...একটি জিনিস খেয়াল করিনি এতক্ষণ, পাশের ফ্লেটের চার চোঁখআলা একটি মেয়েকে দেখতে পেলাম...হাতে একটি বই নিয়ে একবার ছাঁদের এদিকে আরেকবার ঐদিকে হেটেই চলেছে... দেখেই বুঝা যায় অনেক মন দিয়ে পড়ছে...কে জানে সামনে হয়তো পরীক্ষা.. এতই মন দিয়ে পড়ছে যে এখন তার আশে পাশে যদি কেউ একটি বোমও ফেলে তাতে তার কোনো হুশ থাকবে বলে মনে হয়না...

অনেক্ষণ ধরে তাকে দেখেই চলেছি...মেয়েটির চশমাগুলো বেশি গোল আর মোটা, আসলে তার চোঁখ গুলোও কম বড় নয়...চোঁখগুলো মাশআল্লাহ অনেক কিউট আর তাতে চশমা পরাতে তার চোঁখের সৌন্দয' যেন আরো হাজার গুণ বেড়ে গিয়েছে...তার চোঁখের দিকে তাকালে যে কেউ অন্য রাজ্যে হারিয়ে যেতে বাধ্য...বিধাতা যেন নিজের হাতে সৃষ্টি করেছেন সে চোঁখগুলো...বাতাসে তার চুলগুলো কিছুক্ষণ পর পর চশমার সামনে এসে পরছিলো আর সে একরাশ বিরক্তি নিয়ে সে চুলগুলিকে সাথে সাথে কানে গুজে দিচ্ছিলো... এভাবে বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকা গেলনা কেননা মেয়েটি দেখতে পেয়েছে আমায়...আমারও এভাবে বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকাটা ঠিক হয়নি...মেয়েটিও হয়তো বুঝে গেছে যে আমি এতোক্ষণ তাকে দেখছিলাম...কিছুটা রাগি লুক নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো, কিছু হয়তো বলতে চেয়েছিল তবে কিছু না বলে পিছন ফিরেই চলে যায় সে...

চারপাশের এলাকাটা ঘুরতে বের হলাম আফ্রাকে নিয়ে...বলতে ভুলে গেছি বাড়িআলার ছোট মেয়ে আফ্রা মণির সাথে আমার ভালোই খাতিল...তার ইচ্ছায় বের হওয়া, জোরাজুরি করছিলো খুব...রাস্তা থেকে রিকসা নিয়ে ঘুরতে লাগলাম... ভালোই লাগছে ঘুরতে... কিছুক্ষণ যেতেই আফ্রা বলতে লাগলো তার নাকি রিকসায় চড়তে ভালো লাগছেনা তাই হাটবে... তার ইচ্ছাতেই কিছু দূর গিয়েই নেমে পরলাম...
-ভাইয়া মিঠাই খাবো?
-রাস্তার জিনিস খাওয়া ভালোনা তুমি তা জানোনা..?
-না না আমাকে কিনে দাও?
-আচ্ছা বাবা দাড়া কিনে দিচ্ছি...
মিঠাই কিনে দিয়েই আমরা হাটতে লাগলাম...আফ্রা খুব মজা করেই খাচ্ছে মিঠাই... হাতা, গালে একেবারে মাখামাখি অবস্হা... তার খাওয়া দেখে আমরও খেতে ইচ্ছা করছিলো...বলতে ইচ্ছা করছিলো পেটুক একটার সামনে দাড়িয়ে দাড়িয়ে খাওয়া হচ্ছে কিন্তু একটি বারের জন্যও জিজ্ঞেস করা হচ্ছেনা আমি খাবো কিনা...

হাটতে হাটতে একটা স্কুলের সামনে চলে এলাম...আফ্রা এই স্কুলটাতে টুতে পড়ে... আমাকে বলতে লাগলো এখানকার যত খবর তার জানা আছে...এত ছোট বয়সেও এখানকার পথ ঘাট সব তার চেনা...আমার মনে পড়ে ছোট বলেয় একবার রাস্তায় হারিয়ে গিয়েছিলাম...সেদিন এক বড় ভাই বাসায় পৌছে না দিলে কি যে হতো আল্লাহই ভালো জানতেন...আমরা আরো কিছুটা এগোতেই রাস্তার পাশে ফুসকার দোকান দেখতে পেলাম...আফ্রা আবার বায়না ধরলো ফুসকা খাওয়ার জন্য...হাটতে হাটতে দোকানের কাছে যেতে লাগলাম...কাছে গিয়েই দুটো প্লেট ফুসকা দিতে বললাম মামাকে...
আংকেল আমার টাতে ঝাল কম দিয়েন, আফ্রা বলে উঠলো...দেখলাম আফ্রার কথা শুনে মামাকে হেসতে...
হঠাৎ অনেকগুলো মেয়ে আসলো দোকানটিতে...দেখেই বুঝা যায় সবগুলো কলেজে পড়ে...একটি মেয়েকে কাছে এগিয়ে আসতে দেখলাম... কাছে এসেই আফ্রার গাল টানা শুরু করলো...আফ্রা এতক্ষণ খাওয়ার দিকেই মন ছিলো হঠাৎ গাল টানাতে কিছুটা বিরক্ত হয়েছে সে...উপরে তাকাতেই আবার মুখে হাসি ফুটে উঠলো,,
-ওয়াজিফা আপু তুমি কখন এলে..?(আফ্রা)
-মাত্র কলেজ ছুটি হলো তাই বান্ধবীদের সাথে ফুসকা খেতে এলাম... তা তুই কি করিস এখানে...কিরে সব কি তুই খাবি নাকি আমাকেও একটা দে ফুসকা...?
-না না আপু আমার থেকে নিওনা তুমি ভাইয়াকে বলো তোমাকে কিনে দিবে...
-কোথায় তোর ভাইয়া?
-আমার পাশে কে বসে আছে দেখতে পাওনা...
আমার দিকে আঙ্গুল তাক করে,
-এটা তোর ভাইয়া?
-না ওয়াজিফা আপু এটা আমার আব্বু..!
-পাকনামি করিস তাইনা, দাঁড়া দেখাচ্ছি মজা...
আফ্রা তোর ভাইয়াটাকে বল হা করা বন্ধ করতে তা না হলে মাছি ঢুকে যাবে যে...

সত্যিতো আমি হা করে আছি, এতোক্ষণ খেয়াল করিনি...আসলে ওদের দুজনের দুষ্টামি গুলো এত মনোযোগ দিয়ে দেখছিলাম যে খেয়াল করিনি...
-ভাইয়া ওয়াজিফা আপু ফুসকা খাবে তুমি কিনে দাও?
-নিতে বল তোর আপুকে...
কথাটা বলে মনে হয় মস্তবড় ভুল করেছি কারণ ওয়াজিফার বান্ধবীগুলোও বায়না ধরছে তাদেরকেও খাওয়াতে হবে ফুসকা...ইচ্ছা করতেছিলো সব গুলোকে তাল গাছ থেকে আছাড় মেরে মাটিতে ফেলি...মুখে তো আর বলা যায়না এসব কথা... ভাব দেখিয়ে মামাকে বলেছিলাম সবাইকে প্লেট ভরিয়ে ফুসকা দিতে...কত কষ্ট করে মা এর কাছ থেকে ১০০০ টাকা নিলাম...আর এখন কয়েক মিনিটের মধ্যে মানিব্যাগ ফাকা হয়ে যাবে...সবার খাওয়া শেষে দেখলাম ৭০০ টাকা বিল আসছে...মাইয়াগুলো এতো বদের বদ একটা ধন্যবাদ পর্যন্ত দেয়নি...খেয়ে দেয়ে আমারে ফকির করি পালাই গেছে...
এই মুহুর্তে আমরা এখানে তিনজন বসে আছি...আমি, ওয়াজিফা এবং আফ্রা... আফ্রা আর ওয়াজিফা গল্প করেই চলেছে...কিছুক্ষণ পর ওয়াজিফা আমাকে উদ্দেশ্য করে বললো,,
-ভাইয়া আমি আসলে খুব দু:খিত...আমার কারণে আপনের.........
-আরে না না কষ্ট কিসের...আমার তো ভালোই লেগেছে তাদের সাথে মজা করতে, কথা বলতে... মনে মনে বলতেছিলাম যা ক্ষতি হবার তা হয়ে গেছে...
.
রাস্তা দিয়ে হাটছি, উদ্দেশ্য বাসায় ফেরা...তখন থেকেই একটা বিষয় নিয়ে অনেক চিন্তা করছি...আমার কেন যেন মনে হচ্ছিলো ওয়াজিফাকে আগে কোথায় দেখেছি আমি তবে ঠিক মনে পরছিলনা...আরো কিছুটা সময় যাবার পর মনে পরলো তাকে আমি ছাঁদে দেখেছিলাম কিছুদিন আগে তবে ছাঁদে দেখা মেয়েটি এবং আমার সামনে দাড়িয়ে থাকা মেয়েটির সাথে কিছুটা না অনেকটাই পার্থক্য দেখতে পাচ্ছিলাম...তাই ঠিক সিওর হতে পারছিলাম না...আমার সামনে দাড়িয়ে থাকা ওয়াজিফাকে দুদিন আগে যখন দেখেছিলাম ছাঁদে তখন তাকে আজকের মতো অতটা মোটা মনে হয়নি আমার কাছে, আজকে যতটা মনে হয়েছে এবং তার চোঁখে চশমা দেখেছিলাম সেদিন কিন্তু আজ দেখতে পাচ্ছিলাম না...আমি সিওর হওয়ার জন্য ওয়াজিফাকে জিজ্ঞেস করলাম,,
-ওয়াজিফা তোমাকে একটা প্রশ্ন করবো?
আমার কথা শুনে ওয়াজিফা আমার দিকে ফিরে তাকলো...
-জি বলুন, ভাইয়?
-আফ্রাদের পাশে যে বেগুণি কালারের ফ্লেটটি আছে সেখানে তোমার বাসা, আমি কি ঠিক বলছি?
-হুম ঠিক, তা আপনি কিভাবে জানলেন?( চোঁখে বিস্নয়)
-তোমাকে দুদিন আগে ছাঁদে দেখেছিলাম তুমি তখন বই পড়ছিলে... মনে পড়েছে তোমার?
-ভাইয়া আপনের কোথায়ও ভুল হচ্ছে...দুদিন আগেতো দুরে থাক আমি গত এক সপ্তাহে একদিনও ছাদে যাইনি...
-আরে না ভুল কেন হবে আমি সত্যি তোমাকে দেখেছি...
খুব অবাক হলাম ওয়াজিফার কথা শুনে...ওকে আরও বেশি অবাক মনে হচ্ছে, দুদিন আগের ঘটনা এতো তাড়াতাড়ি ভুলে গেলো কিভাবে...সেদিনের মতো ওয়াজিফাকে বিদায় দিয়ে আমি এবং আফ্রা চলে আসলাম...

এখন ছাদে গেলেই তাকে দেখতে পাই আমি, সেই চিরচেনা বই হাতে...কিছুদিন যাওয়ার পর বুঝলাম মেয়েটিকে ওয়াজিফার মতো দেখতে হলেও ওয়াজিফা নয়...তবে এতো মিল কিভাবে তা আমি ভেবে পাইনা...বই পড়াতে এতোটা মনোযোগী থাকে যে, সে আমাকে খেয়াল করেনা কখনো আর আমি সেই সময়টাতে তাকে মন ভরে দেখতে থাকি...কিন্তু তা বেশাক্ষণ স্হায়ী হয়না কেননা আমাকে দেখতে পেলেই সে চলে যেত...কত বার কথা বলার চেষ্টা করেছি তার সাথে কিন্তু লাভ হলোনা...আমার প্রশ্ন হলো সে কেনো কথা বলেনা..?

তার মুখ থেকে কথা বের করার জন্য একদিন ইচ্ছা করে একটি কাজ করলাম...
"এই মেয়ে তুমি কথা বলোনা কেন...? তোমাকে যেদান প্রথম দেখেছিলাম সেদিন থেকেই আমি তোমাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখা শুরু করেছি অথচ তোমার নামটাও এখনো জানা হয়নি এখনো"
এতটুকু একটি কাগজে লিখে তার দিকে মেলা দিয়েছিলাম...কাগজটা যখন সে হাতে নিয়েছিল তখন আমি বকা খাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে ছিলাম...অবাক করা বিষয় হচ্ছে সে কিছুই বললোনা আমায় শুধু আঙ্গুল দেখিয়ে ওয়ার্নিং দিয়ে চলে গেল...পরের ২,৩,৪,৫ দিনেও তার কোনো দেখা পেলামনা ছাঁদে...এই পাঁচ দিনে তাকে দেখার জন্য মনটা বারে বারে ছটপট করছিলো কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি...তার আশা হয়তো ছেড়ে দিতে হবে ভেবে ভেবে যখন কষ্ট পাচ্ছিলাম সেদিন রাতেই ওয়াজিফার আগমন ঘটলো...সে তার সঙ্গে করে একটি চিঠি নিয়ে এসেছে আমার জন্য...
-আপু দিয়েছেন চিঠিটা..?
-কোন আপু?
-যাকে ছাঁদে চিঠি মেলা দিছিলেন...
ওয়াজিফা আর কথা না বাড়িয়ে চলে গেল...আমি চিঠিটা খাম থেকে বের করে পড়তে শুরু করলাম,,
নাম জানতে চেয়েছিলেন তাইনা, আমার নাম আশফিকা...আপনি রাস্তায় ওয়াজিফাকে যা যা জিজ্ঞেস করেছিলেন তা পরে ওয়াজিফা আমায় বলেছে...আসলে ওয়াজিফা আর আমি জমজ...আমি বয়সে ওর থেকে ১৫ মিনিটের বড়... আপনি বলেছেন আমাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেন...ভালো কথা স্বপ্ন দেখতেই পারেন কিন্তু যে স্বপ্নের কোন পূর্ণতা পাবেনা তার পিছে দৌড়িয়ে কি খুব একটা লাভ হবে... একটা ছোট ঘটনা বলি আপনেকে,
আমি যখন ক্লাস নাইন এ উঠি তখন ক্লাস টেন এর আহনাফ নামের একটা ছেলেক আমার অনেক ভালো লাগতো...তাকে নিয়ে কত কিছু ভাবতাম তা বলে শেষ করতে পারবোনা... তাকে নিয়ে কত কি যে লিখেছি বই, খাতা, ডায়েরিতে তার কোনো ইয়েত্তা নেই...পরে আর থাকতে না পেরে আমার কাছের এক বান্ধবীর মাধ্যমে একদিন তাকে সব জানানো হয় এবং আহনাফ আমাকে সানন্দে গ্রহণ করে...সেদিন রাতে আমার কোনো ঘুম হয়নি খুশিতে...তার পর তার সাথে ভালোই যাচ্ছিলো দিন কাল...কাছু মাস পর আহনাফ আমাকে ছেড়ে দেয়, এতে আমি অর দোষ দেখিনি কারণ ও জানতো আমাদের সম্পর্ক কখনো পূর্ণতা পাবেনা কেননা জন্মের পর থেকেই আমি বোবা, আমি যে কথা বলতে পারিনা...এমন কারো সাথে কে থাকতে তার আশা হয়তো ছেড়ে দিতে হবে ভেবে ভেবে যখন কষ্ট পাচ্ছিলাম সেদিন রাতেই ওয়াজিফার আগমন ঘটলো...তার সঙ্গে একটি চিঠিও দেখতে পেলাম...-আপু দিয়েন চিঠিটা..? -কোন আপু? -যাকে ছাঁদে চিঠি মেলা দিছিলেন...ওয়াজিফা আর কথা না বাড়িয়ে চলে গেল...আমি চিঠিটা খাম থেকে বের করে পড়তে শুরু করলাম,,.নাম জানতে চেয়েছিলেন তাইনা, আমার নাম আশফিকা...আপনি রাস্তায় ওয়াজিফাকে যা যা জিজ্ঞেস করেছিলেন তা পরে ওয়াজিফা আমায় বলেছে...আসলে ওয়াজিফা আর আমি জমজ...আমি বয়সে ওর থেকে ১৫ মিনিটের বড়...একটা ছোট ঘটনা বলি, আমি যখন নাইন এ উঠি তখন ক্লাস টেন এর আহনাফ নামে একটা ছেলেক আমার অনেক ভালো লাগতো...তাকে নিয়ে কত কিছু ভাবতাম... তাকে নিয়ে কত কি যে লিখেছি বই, খাতা ডায়েরিতে তার কোনো ইয়েত্তা নেই...পরে আর থাকতে না পেরে আমার কাছের এক বান্ধবীর মাধ্যমে তাকে সব জানানো হয় এবং আহনাফ তা সানন্দে গ্রহণ করে...সেদিন রাতে আমার কোনো ঘুম হয়নি খুশিতে...তার পর তার ভালোই যাচ্ছিলো দিন কাল...কাছু মাস পর আহনাফ আমাকে ছেড়ে দেয়, এতে আমি অর দোষ দেখিনি কারণ ও জানতো আমাদের সম্পর্ক কখনো পূর্ণতা পাবেনা কেননা জন্মের পর থেকেই আমি বোবা, আমি যে কথা বলতে পারিনা...এমন বোবা মেয়ের সাথে কোন বাবা মা তার ছেলেকে বিয়ে দিতে চাইবে...
আমার চিঠিটা হাতে পাওয়ার পর হয়তো আপনের আমাকে নিয়ে ধারণাগুলে সব বদলে যাবে...আমার সঙ্গি এখন আমার বই...তাই প্লীজ কাল থেকে আপনি ছাঁদে আসবেননা... নিচে ছোট করে তার নামটি লিখে দেওয়া "আশফিক"

চিঠিতা পড়া শেষে স্হির হয়ে দাড়িয়ে রইলাম কিছুক্ষণ...সময় যেন থমকে গিয়েছে কি করবো বুঝে উঠতে পারছিনা...না, যা ভাবার এখনি ভেবে নিতে হবে...ছোট থেকেই যে কথা বলতে পারেনা তার জীবনটা কেমন কষ্টের তা না বললেও চলে...না তাকে আর কষ্ট পেতে দেওয়া যাবেনা...আমার একেই চাই...রাত ১২টা বাজতে চললো কিন্তু তাহসান এখনো একই জায়গায় একই ভাবে এখনো চিঠিটির দিকে তাকিয়ে রয়েছে...সে উঠলো বসা থেকে, ঘুমানো দরকার...কালকে ঘটনার জন্য অপেক্ষা করতে হবে...ভবিষ্যৎ কি হবে তা কেউ বলতে পারেনা তবে তাহসান এখনি ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করা শুরু করে দিয়েছে...তার ভবিষ্যৎ এখন তার কাছে পরিষ্কার............................
Cristiano Redoy

No comments:

Post a Comment

comment

Contact Us

Name

Email *

Message *