ভালোবাসা পাওয়ার চাইতে ভালোবাসা দেওয়াতেই বেশি আনন্দ।

Thursday, December 29, 2016

জোর করে বিয়ে করব

ভালোবাসার গল্প, ভালবাসার গল্প, প্রেমের গল্প, valobashar golpo, premer golpo, love story

কাজটা কি ঠিক করলে , আদনান ?
-কেন ? কি ভুল করেছি ?
-তুমি আমায় জোর করে বিয়ে করছো । আবার কিছুক্ষণ আগে অনুমতি না নিয়ে কিস করলে । আর বলছো কি ভুল করছি ?
-কেন ? আমি কি খুব অন্যায় করে ফেলেছি ?
-হ্যা করেছোই তো । আমি কারো করুণা প্রার্থী হয়ে বেঁচে থাকতে চাই না । কালকে আমাকে ডিভোর্স দিবে । নতুবা আমি আত্মহত্যা করতে বাধ্য হবো । বলেই মীম কান্না করতে করতে ছাদে চলে যায় ।
.
.
আদনান খুবই মিশুক ছেলে । যদিও আদনানের জন্ম গরীব পরিবারে কিন্তু আদনান ছোটবেলা হতেই বাবা , মা ও বড় ভাইয়ের খুব আদরেই বড় হয়েছে । তাই দরিদ্র পরিবারে জন্ম গ্রহন করেও অভাবের মুখ দেখে নাই ।
.
আদনান খুব মেধবী ছাত্র হওয়ার সুবিধার্থে ঢাকা কলেজে চান্স পায় । তাই খুব সহজেই কয়েকটা টিউশনি করিয়ে জীবন অতিবাহিত করতে থাকে । কিন্তু জীবনে খুব একা অনুভব করতে থাকে । কারণ গুটি কয় বন্ধু তাও তারা সারারাত গার্ল ফ্রেন্ড নিয়ে মেতে থাকে ।
.
তাই আদনানও গার্ল ফ্রেন্ড খুজতে থাকে । কিন্তু গার্ল ফ্রেন্ড তো ছেলের হাতে মওয়া না যে চাইলাম আর পেয়ে গেলাম । তাই আদনান চিন্তা করতে থাকে কিভাবে গার্ল ফ্রেন্ড পাওয়া যায় । অবশেষে পেয়েও যায় একটা উপায় । আদনান চিন্তা করে কাল কলেজে যে প্রথম আসবে তার নাম দিয়ে ফেসবুকে সার্চ দিব যে মেযে প্রথম আসবে তার সাথেই প্রেম করবে । এইসব ভাবতে ভাবতে আদনান কখন যে ঘুমিয়ে যায় ।
.
আদনান পর দিন কলেজে যেয়েই দেখে লামিম কলেজে আসছে । আর তখন আদনানের খেয়ালও হয় যে তাদের কলেজে কোনো মেয়ে নেই । এতে আদনানের মন খারাপ হয়ে যায় । কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই আবার মন ভালো হয়ে যায় । কারণ লামিমের নামে মধ্যে মেয়ের নাম আছে আর তা হল “মীম”
.
কলেজ থেকে ফিরেই আদনান মীম নাম সার্চ দেয় এবং প্রথম ফুল হাতে দাড়িয়ে থাকা একটা আইডি আসে । আদনান মেয়েটিকে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠায় । কিন্তু না মেয়েটি আদনানের রিকুয়েস্ট অ্যাকসেপট করে না । অবশেষে আদনান মেসেজ দেয় মীমকে ।
-আই লাভ ইউ ।
-সরি ।
-ফাস্ট সাইড অফ লাভ ।
-কি যা তা বলছেন ? ব্লক করে দিবো কিন্তু ।
-দেন । তবুও ভালোবাসি ।
-............( সিন কিন্তু নো রিপ্লাই )
.
এভাবে প্রত্যেকদিন আদনান মেসেজ করতে থাকে কিন্তু মীম সিন করলেও উত্তর দেই না । অবশেষে একমাস পরে মীম টুকটাক কথা বলতে থাকে । কিন্তু মীম আদনানের প্রস্তাবে রাজি হয় না । কিন্তু আদনানের সাথে ফ্রেন্ডশীপ করতে রাজি হয় । কিন্তু আদনান সুযোগ পেলেই মীমকে ভালোবাসার কখা বলত । আর মীমের কাছে না বাক্য আরও একবার শুনত । আদনানও কম কিসে ? সে প্রায় মীমকে বলত “আমি তোমাকে জোর করে হলেও বিয়ে করব” । মীম কিছু বলত না শুধু হাসতো । হয়ত মীমও আদনানকে পছন্দ করত ।
.
চার বছর পর আজ মীম ও আদনান দেখা করতে চলেছে । যদিও মীম আদনানের ছবি দেখেছে কিন্তু আদনান মীমের ছবি দেখে নাই । সেই সকাল থেকে আদনান বসে আছে । কিন্তু মীমের আসার কোনো নাম গন্ধ নাই । আদনান মীমের ফোনে ফোন দিচ্ছে কিন্তু ফোন যাচ্ছে না । ও আপনাদের তো বলাই হয় নি এই চার বছরের মধ্যে মীম ও আদনান মধ্যে তাদের নাম্বার আদান প্রদান হয়ে গেছে ।
.
কিন্তু মীম আসছে না আবার মীমের ফোনও বন্ধ । আদনানের চিন্তা বেড়েই চলেছে । বিকালের দিকে আদনানের ফোনে ফোন আসে মীমের ফোন থেকে । আদনান ফোন ধরতেই একটা লোক বলে উঠলো “ এই মেয়েটির কল লিস্টে আপনার নাম্বার আছে তাই আপনাকেই বলছি । এই মেয়েটিকে এসিড মারা হয়েছে । আপনি তাড়াতাড়ি ঢাকা মেডিকেল কলেজে চলে আসুন । এই কথা শোনা মাত্র আদনান তাড়াতাড়ি করে হাসপাতে পৌছায় । গিয়ে দেখে একটা মেয়ে বেডে শুয়ে আছে দেখতে খুব ফর্সা কিন্তু মুখটি কালো । মেয়েটি অথ্যাৎ মীমের এখনও জ্ঞান ফিরে নাই । একটুপর ডাক্তার কাছে গিয়ে আদনান দাড়াতেই ডাক্তার আদনানকে জানায় “মীমকে প্রথমে অজ্ঞান করে রেফ করা হয় । তারপর মুখে এসিড মেরে ফেলে দেওয়া হয় ” । এই কথা শোনার পর আদনান স্তদ্ভ হয়ে যায় কিছুক্ষণের জন্য ।
.
আদনান মীমের বাবাকে ফোন দেয় । মীমের বাবা-মা এসে , মীমকে দেখে চিৎকার করে কান্না করতে থাকে । তারপর তারা মীমের চিকিৎসার জন্য মীমকে দেশের বাহিরে পাঠায় ।
.
চিকিৎসার পর মীম সুস্থ হয়ে দেশে ফিরে আসে । কিন্তু আদনানের সাথে আর তেমন কথা বলে না । বরং আদনানকে খুব অ্যাভোয়েট করতে শুরু করে । আদনান মীমের কাছে কারণ জানতে চাইলে মীম পরিষ্কার ভাবে আদনানকে জানায় , সে আর আদনানকে ভালোবাসে না । আদনান মীমকে ফোন করলে মীম নানা রকম বাজে কথা শুনাত । কিন্তু তবুও আদনান মীমকে নিয়মিত ফোন করত ।
.
এইভাবে আরও দুইবছর চলে যায় । আদনান একটা ভালো চাকরি পায় । আদনান বাবা-মাকে নিয়ে শহরে থাকতে শুরু করে । বাবা-মা বিয়ের কথা বললে আদনান মীমের কথা তাদের খুলে বলে । আদনানের বাবা-মা সব শুনার পর তারা রাজি হয় ।
.
তারপর দিন আদনানের বাবা-মা মীমের পরিবারের কাছে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যায় । মীমের বাবা-মা রাজি হলেও মীম আদনানের বাবা-মাকে খুব অপমান করে , বাড়ি থেকে বের করে দেয় ।
.
তাই তো আজ আদনান জোড় করে মীমকে কাজি অফিসে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করছে । বাড়িতে আনার পথে মীমকে কিস করে । তাই তো মীম আদনানকে এই হুমকি দিল ।
.
আদনানও ছাদে গেল । হাতে একটা ছুরি । গিয়ে মীমের হাত ধরে মীমকে জিজ্ঞেস করে
-মীম , আমায় তুমি ভালোবাসো ?
-না ।
-আমি তোমার অমতে বিয়ে করছি ?
-হুম
“মীম হুম বলার সাথে সাথে আদনান ছুরি দিয়ে আদনানের হাত কেটে ফেলে ” । মীম চিৎকার দিয়ে আদনানের কাছে যায় কিন্তু আদনান মীমকে দুরে সরিযে দেয় । আর বলে
-মীম তুমি আমাকে টাচ করবে না ।
-তোমার রক্ত পড়ছে ।
-পড়ুক । তাতে তোমার কি ? তুমি তো আর আাকে ভালোবাসা না । রক্ত পড়ছে পড়ুক ।
-প্লিজ আদনান এমন করো না ।
-এমন করার আর দেখেছো কি ? এখন তোমাকে সিধান্ত নিতে হবে । যদি তুমি আমাকে না ভালোবাসো তাহলে নিচে চলে যাও । আর শুন তুমি নিচে নামার আগেই আমি ছাঁদ থেকে ঝাপ দিব । তোমার ভালোবাসা না পেলে আমি বেঁচে থেকে কি করব ?
-প্লিজ আদনান পাগলামি করো না । আমার কাছে কিছুই নাই তোমাকে দেবার । তাই আমি তোমাকে আমি দূরে রাখতে চাইছি ।
-আমার তোমার দেহ নয় । তোমাকে চাই । আর না হলে......
.
“মীম আদনানকে আর কিছু বলতে না দিয়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরে বলে , তুমি সত্যি আমায় জোড় করে বিয়ে করলেই ” ।




-লেখক :
 Habib Adnan

Contact Us

Name

Email *

Message *