ভালোবাসা পাওয়ার চাইতে ভালোবাসা দেওয়াতেই বেশি আনন্দ।

Friday, April 27, 2018

সব মেয়ে এক না

valobashar golpo, ভালোবাসার গল্প, প্রেমের গল্প, ভালবাসার গল্প
এই শুনো.....
আদি তোমাকে বলছি। ( আমি )
:- এই মেয়ে আপনি আমাকে তুমি করে বলছেন কেন ? ( দিপ )
:- ভবিষ্যতের বরকে তুমি করে বলার অভ্যস করতে হবে তো
:- এই আপনি কি বলছেন এসব।
:- যা বলছি ঠিকই বলছি।
:- পাগল হইছেন নাকি।
:- কই না তো।
:- আজব মানুষ তো আপনি।
:- তোমার বউ তো আজব না হয়ে উপায় কি।
:- এই তুমি জানো আমি কে।
:- হুম জানি তো। তুমি দিপ চৌধুরী। বাবা দিপক চৌধুরী মা মায়া চৌধুরী। তুমি স্নাতক পাশ করেছ। আর এখন এলাকায় রংবাজী করো। নেশার মধ্যে নিজেকে ডুবিয়ে রাখো।
:- ________ ( হা করে তাকিয়ে আছে )
:- এভাবে কি দেখছ।
:- আপনি এতো কিছু জানেন কি করে।
:- হবু বরের একটু আকটু খবর তো রাখতেই হয় বলো।
:- এই মেয়ে আমার কিন্তু এবার মাথা গরম হচ্ছে।
:- ঠান্ডা পানি দিব।
:- ধুরররর....আপনার সাথে কথা বলাই আমার ভুল। ( দিপ চলে গেল )
:- হাহাহাহাহা......
আমি দিয়া। মা বাবা কেউ নেই। অনাথ আশ্রম থেকেই আমি বড় হয়েছি। পরাশুনা শেষ করে এখন আমি একটা ছোট্ট কোম্পানিতে জব করি। জীবনে সুখের মুখ না দেখলেও কোন কষ্টের কাছে নিজেকে পরাজীত হতে দেই নি। আর এতোক্ষন যার সাথে কথা বললাম ওর পরিচয় তো আগেই শুনেছে। দিপকে আমি ভালোবাসি অনেক বশি ভালবাসি কিন্তু দিপ কখনোই আমাকে পাত্তা দিত না। কিন্তু আমার বিশ্বাস ছিল জীবন যুদ্ধ যখন আমাকে হারাতে পারে নি। তখন ভালবাসার কাছেও আমি হারবো না। দিপ আমাকে ভালবাসবেই। এটা আমার বিশ্বাস ছিল।
রোজ একবার করে ওর সামনে গিয়ে ভালবাসি বলাটা আমার রোজগার রুটিন হয়ে গেছে। আমি জানি ও এতো তারাতারি আমাকে মেনে নিতে পারবে না। ভাবছেন তো কেন ? কারন ওর অতীত। ও একটা মেয়েকে খুব ভালবাসতো। ভালবাসতো বললে ভুল হবে এখনো হয়তো বাসে। ওর নাম তোয়া।৪ বছর ওদের মধ্যে ভালই সম্পর্ক ছিল। কিন্তু তোয়া একজনে খুশি ছিল না। ও আরো কিছু ছেলের সাথে সম্পর্ক করতো। দিপকে তো শুধু ব্যবহার করতো টাকার জন্য। দিপ যেদিন সব বুঝতে পারে সেদিন তোয়াকে অনেক বুঝিয়েছিল। কিন্তু তোয়া না বুঝে দিপকে ছেড়ে চলে গেল। দিপ অনেক বার তোয়াকে ফরিয়ে আনার চেষ্টা করছে কিন্তু তা বোঝার পাত্রী তোয়া না। ও যখন যেখনে ভাল দেখবে তখন সেখানেই চলে যাবে। ভালবাসার মূল্য তোয়ার কাছে নেই। তোয়া চোলে যাওয়ার পর থেকেই দিপ নেশার মধ্যে নিজেকে ডুবিয়ে রাখে। আর এলাকায় রংবাজী করে। তবে ওর মনটা অনেক ভালো।
:- এই দিপ শোনো না।
:- আপনাকে না বলছি আমার সাথে কথা বলবেন না।
:- কেন আমাকে তোমার পছন্দ না।
:- আমি কোন মেয়েদেরই পছন্দ করি না।
:- কেন
:- কারন আপনারা প্রয়োজন পরলে আসেন। আবার প্রয়োজন ফুরালে চলে যান। আপনারা জীবন নষ্ট করতে পারেন আর কিছুই পারেন না।
:- দিপ সবাই এক হয় না। একবার বিশ্বাস করে দেখ। কখনোই ছেড়ে যাব না। প্লিজ আমাকে ফিরিয়ে দিও না। ( চোখের কোনে কখন যে পানি এসেছে বুঝতেই পারি নি )
:- আমার পক্ষে সম্ভব না। আমাকে ক্ষমা করবেন। ( মনে সংশয় নিয়ে বললো )
:- দিপ আমি পারবো না তোমাকে ছেড়ে বাচতে।
:- _______( কথাটা দিপকে একটু আঘাক করেছে। )
দিপ চলে যাচ্ছে আর আমি ওর চলে যাওয়াটা দেখছি। জানি ও আমাকে এতো তারাতারি বিশ্বাস করতে পারবে না। আর না পারাটাই স্বাভাবিক। বিশ্বাস তো কাচের একটা আয়না একবার ভাঙ্গলে জোড়া লাগানো আর সম্ভব না। তবে আমাকে পারতেই হবে।আমিও হাল ছারছি না.....
:- দিপ তুমি সিগারেট খাচ্ছ
:- দেখতেই পাচ্ছেন জিগেস করার কি আছে।
:- আর কখনো খাবে না। ( সিগারেটটা ওর হাত থেকে ফেলে দিলাম )
:- আপনার এতো বড় সাহস আমার সিগারেট ফেলে দিলেন।
:- হুম দিলাম। আমার হবু বরের ভালো মন্দ তো আমাকেই দেখতে হবে।
:- প্লিজ বাদ দিন এই নোংরামি।
:- আমার ভালবাসা তোমার কাছে নোংড়ামি মনে হলো ( চোখের পানিকে বাধ মানাতে পারলাম না )
:- _________( মনে মনে দ্বিধা গ্রস্থ হলো )
:- দিপ আমি সত্যি তোমাকে ভালবাসি আর আমি জানি তুমিও আমাকে অপছন্দ করো না। যদি করতে তাহলে এতোদিনে আমার যেকোন ক্ষতি করতে পারতে। কিন্তু তুমি করো নি। কারন তুমিও আমাকে পছন্দ করো য়
:- _______
:- তোমার নিরবতা আবার প্রমান করে দিল তুমি আমাকে ভালবাস।
:- হ্যাঁ বাসি। কিন্তু কি হবে ভালোবেসে। দুদিন পর তো আমাকে কাঁদিয়ে চলে যাবে। তোমরা মেয়েরা এমনই হও।
:- আমি তোয়া না আমি দিয়া। এবকার বিশ্বাস করে দেখো। তোমার বিশ্বাসের অর্ময়াদা হতে দিবো না।
:- তুমি তোয়ার কথা জানো।
:- হুম আমি সব জানি।
:- কিভাবে।
:- তোমাকে আমি খুব ঘৃণা করতাম প্রথমে। কিন্তু একদিন দেখলাম তুমি একজন অন্ধকে রাস্তা পার করে দিচ্ছো অন্য একদিন দেখলাম তুমি কিছু পথশিশুকে খাবার কিনে দিছো। যার মন মানসিকতা এতো ভালো সে কি করে খারাপ হতে পারে জানার আগ্রহ নিয়ে তোমার বন্ধুদের সাথে কথা বলি। আর তারা আমাকে সব বলে।
:- দয়া করছো আমাকে।
:- দয়া হলে এতোদিন তোমার পিছনে পরে থাকতাম না। তোমাকে যতই দেখি ততই বেশি ভালবেসে ফেলি।
:- কখনো ছেড়ে যাবে না তো
:- কখনোই না। তবে তোমাকে একটা কথা দিতে হবে।
:- কি কথা।
:- এভাবে পাগলের মতো আর থাকতে পারবে না। রংবাজী করা চলবে না ।নতুন করে জীবন শুরু করতে হবে। বেচে থাকার তাগিদে চাকরি করতে হবে আর সব কিছুর মধ্যেও আমাকে অনেক ভালবাসতে হবে।
:- আমি সব করতে রাজি আছি কিন্তু
:- আবার কিন্তু কি
:- কিছুনা।
:- বুঝছি।
:- কি।
:- এখনো বিশ্বাস করতে পারছো না তাইতো।
:- _____
:- চলো।
:- কোথায়।
:- কাজী অফিস।
:- মানি।
:- জিএফ কে বিশ্বাস না করলেও বউকে তো করবে।
:- সত্যি।
:- হুম।
দুজনেই চলে গেল গন্তব্য কাজী অফিস। গন্তব্যে পৌঁছে বিয়ে করে ফেললাম।
বিয়ের দুইমাস হয়ে গেছে। দিপ আর আগের মতো নেই। এখন দিপ একজন দায়ীত্ববান ছেলে। একটা বড় কোম্পানিতে চাকরি করে। দিপ আমাকে খুব ভালবাসে। কখনো ভাবি কেউ আমাকে এতো ভালবাসবে। জীবন যুদ্ধে ও ভালবাসায় আমি জয়ী হয়েছি। দুঃখগুলো আমার কাছে হেরে গিয়েছে। আর সুখ আমার সাথে আপুষ করেছে। আমারা অনেক সুখে আছি আমাদের এই ছোট্ট. সংসারে.......
[ সব মেয়েরা তোয়ার মতো হয় না। কিছু কিছু মেয়েরা দিয়ার মতো হয়। কোন একজনের জন্য। সবাই কে ভুল বুঝবেন না ভালবাসার কাছে সবকিছুই হার মানে। একবার মন থেকে ভালবেসে দেখুন তাকে ছাড়া বাঁচার ইচ্ছেটাই মরে যাবে


 লেখা: JF Arohi

No comments:

Post a Comment

comment

Contact Us

Name

Email *

Message *