ভালোবাসা পাওয়ার চাইতে ভালোবাসা দেওয়াতেই বেশি আনন্দ।

Monday, April 30, 2018

ছোট্ট সংসার।

ভালোবাসার গল্প, প্রেমের গল্প, ভালবাসার গল্প, valobashar golpo
_এইযে শুনছেন..? (উর্মিলা)
_হ্যা, বলো শুনছি। (অর্ণব)
_অফিস থেকে আজ একটু তাড়াতাড়িফিরবেন। একা একা আমার ভালো লাগেনা।
_আচ্ছা তাড়াতাড়ি ফিরবো। উর্মিলা
অভিমানী স্বরে বললোঃ-_প্রতিদিন'ই তো তাড়াতাড়ি ফিরবোফিরবো বলেন। কিন্তু ফিরেন অনেক রাতে। অফিসে এত কি কাজ যে ফিরতে ফিরতেএতরাত হয়ে যায়..?
_এখন অফিসে প্রচুর কাজের চাপ তাই ফিরতেঅনেক রাত হয়ে যায়। আচ্ছা আমার লাঞ্চেরখাবার কই..?
_একমিনিট দাঁড়ান আমি যাবো আর নিয়েআসবো। বলেই উর্মিলা অর্ণবের লাঞ্চেরখাবার আনতে গেলো। দুমিনিট পর অর্ণবেরলাঞ্চের বাটি নিয়ে আসলো উর্মিলা।

তারপর বললোঃ-_এইযে ধরুন আর শুনুন লাঞ্চের সময় হলেঅফিসের কাজ রেখে খাওয়ার কাজ সেরে নিবেন। আগে খাওয়া তারপর কাজ, মনেথাকবে তো..?
_হ্যা, একশবার মনে থাকবে। আচ্ছা আমিগেলাম।
_সাবধানে যাইয়েন। আর…।
_আর কি..?
_না কিছু না।
_বুঝে গেছি আমি
_কি বুঝে গেছেন..?
_সেটা তো বলবো না।
.
অর্ণব ছোট্ট একটা হাসি দিয়ে অফিসে চলেগেলো। উর্মিলা হা করে অর্ণবের চলেযাওয়ার দৃশ্য দেখতেছে আর হাসির মানেখুঁজতেছে। অর্ণব হয়তো উর্মিলার না বল কথাটার মানে বুঝে গেছে তাই যাওয়ার আগে ছোট্ট একটা হাসি দিয়ে গেলো।উর্মিলা অর্ণবকে কিছু একটা বলতে চেয়েওবললো না। মেয়েরা অর্ধেক কথা বলে আরঅর্ধেক ছেলেদের বুঝে নিতে হয়। তবে বাকিঅর্ধেক কথা বুঝতে বেশি সময় লাগে না।যাইহোক পারিবারিক ভাবেই অর্ণব আরউর্মিলার বিয়ে হয়। মা-বাবা এখানে কেউথাকে না। তার মানে বুঝাই যাচ্ছে
সংসারটা খুব ছোট। এই ছোট্ট একটা সংসারহলো অর্ণব আর উর্মিলার। ছোটখাটো একটাচাকরী দিয়ে আর তার পাশাপাশি টিউশনিদিয়ে তাদের জীবন অতিবাহিত হচ্ছে।ভবিষ্যৎ এর চিন্তা করে অর্ণব চাকরীর
পাশাপাশি একটা টিউশনিও করে। কিন্তুসেটা উর্মিলা জানে না। তাই অর্ণবকেপ্রতিদিন রাত করে বাড়ি ফিরতে হয়।
.
লাঞ্চের সময় প্রতিদিনের মত সেদিনওউর্মিলা অর্নবকে ফোন দিলো।
_লাঞ্চ খাইছেন..?
_না খাবো, তুমি খাইছো..?
_আপনার আগে কখনো খাইছি..?
_তা ঠিক, আচ্ছা খেয়ে নাও।
_একটা বিষয় নিয়ে সেই সকাল থেকে ভাবছিকিন্তু কিছুই বুঝতেছি না।
_কোন বিষয়.?
_অফিসে যাওয়ার আগে আপনি মেয়েদের মতমুচকি হাসি দিয়ে চলে যাওয়ার কারণ কি..?
_তুমিও তো অর্ধেক বলে আর অর্ধেক বলোনি
সেটার কারণ কি..?
_আমারটা এমনিই,
_আমারটাও এমনি।
_আপনার হাসির মাঝে কিন্তু রহস্য আছে।
_তা আছে কি না জানি না।
_আচ্ছা, ফোন রেখে ঝটপট খেয়ে ফেলুন।
_খাইলাম তারপর..?
_তারপর অফিস শেষে সোজা বাসায়আসবেন।
_আচ্ছা।
.
প্রতিদিনের মত সেদিনও অর্ণব রাত করেবাসায় ফিরে। বাসার দরজা আগে থেকেইখোলা ছিলো ঢুকার জন্য কলিং বেল চাপদিতে হলো না। ভিতরে ঢুকে দেখতে পেলোউর্মিলা গাল ফুলিয়ে জানালার পাশে
একটা চেয়ারে বসে আছে। আজ অভিমানটা একটু বেশিই মনে হচ্ছে অর্ণবের কাছে। কথাদিয়েছিলো তাড়াতাড়ি ফিরবে কিন্তু কথারাখতে পারেনি কারণ ঐযে অফিস শেষেটিউশনি করে। ভবিষ্যৎ এর জন্য অনেকেইঅনেককিছু করে। অর্ণবও তাই করতেছে। কিন্তুউর্মিলা সেটা আজো জানে না। জানলেহয়তো আর অভিমান করবে না। আরকোনোদিন বলবে না আজ অফিস থেকেতাড়াতাড়ি ফিরবেন। কিন্তু কেন জানিঅর্ণব উর্মিলার কাছে এই বিষয়টা লুকিয়েরাখে। উর্মিলা জানলে হয়তো অর্ণবকে আরটিউশনি করতে দিবে না। এমনিতে অফিসশেষে কাহিল অবস্থা তার উপর টিউশনিকরাটা অনেক কষ্টকর সেটা কে না বুঝে। তবেকষ্ট করলে যে কেষ্ট মিলে সেটা অর্ণবভালো করেই জানে। অর্ণব উর্মিলাকেসারপ্রাইজ দিবে এই ভেবে চুপিচাপি রুমেরভিতর ঢুকলো যাতে উর্মিলা না টের পায়।শরীর থেকে শার্ট খুলে, প্যান্ট-জুতা খুলে
ফ্রেশ হতে গেলো। এসে দেখে উর্মিলাচেয়ার থেকে উঠে জানালা দিয়ে বাইরেতাকিয়ে আছে। রাতের বেলা জানালাদিয়ে বাইরের দৃশ্য অন্যরকম সৌন্দর্য লাগে।কিছুক্ষণ পর অর্ণব ফ্রেশ হয়ে উর্মিলার জন্যআনা আচারের বয়াম ব্যাগ থেকে বের করেবিছানার উপর রাখলো। তারপর পিছনদিকদিয়ে উর্মিলাকে আস্তে করে স্পর্শ করলোঅর্ণব। হঠাৎ করে অর্ণবের ছোঁয়া পেয়েউর্মিলা কিছুটা ভয় পেয়ে গেলো ।

 বুকে দুতিনবার থুথু দিয়ে বললোঃ-_এইভাবে কেউ কাউকে স্পর্শ করে..?হার্টবিট বেরে গেছে আমার। আর কখন আসছেন আপনি..? আমি কই ছিলাম..?
_প্রায় আধা ঘন্টা হবে আসছি। তুমি ভাবনারজগতে ছিলে তাই আমি কখন আসছি বুঝতেপারোনি। যাকগে সে কথা তোমার জন্যএকটা সারপ্রাইজ আছে। সারপ্রাইজের কথা
শুনে উর্মিলা আগ্রহ নিয়ে বললোঃ-_কি সারপ্রাইজ..?
_আগে চোখ বন্ধ করো। খবরদার চোখ খুলতেপারবে না।
_আচ্ছা, ঠিক আছে খুলবো না।
তারপর অর্ণব উর্মিলা হাতে ধরে বিছানারকাছে আনলো। অর্ণব বললোঃ-
_এইবার চোখ খুলো।

চোখ খুলে উর্মিলা আচারের বয়াম দেখেখুশির চেয়ে বেজার। অর্ণব ভাবছে তাহলেকি উর্মিলার আচার পছন্দ না..? উর্মিলাঅর্ণবের দিকে তাকিয়ে আছে।
একটু ভেবেবললোঃ-_শুধুশুধু টাকা খরচ করে কেন এসব আনতেগেলেন..?
উর্মিলার এই কথায় অর্ণব কিছুটাস্বস্তি ফিরে পায়। অর্ণব ভাবছিলোউর্মিলার আচার একদম'ই পছন্দ না। বিয়েরপরের মেয়েদের ফেভারিট খাবার যে আচারসেটা অর্ণব ভালো করেই জানতো।
অর্ণবআচারের বয়ামটা খুলতে খুলতে বললোঃ-_তোমার চাওয়া পাওয়াকে কিছুটা হলেওপ্রাধান্য দিতে হবে তাতে টাকা খরচ হলেহোক। অর্ণবের কথায় উর্মিলা খুশিতেআত্মহারা। এমন স্বামী পাওয়া আসলেই
ভাগ্যের ব্যাপার। কোনোকিছু চাওয়ারআগেই পেয়ে যায়। উর্মিলা হাসিমাখা মুখে
বললোঃ-_আমি কিছু চাওয়ার আগেই আপনি বুঝেফেলেন কিভাবে..?
_আমি তোমার চোখ দেখলেই বুঝতে পারিতুমি কি চাও। কারণ আমি তোমাকে অনেকঅনেক ভালোবাসি। আর স্বামী-স্ত্রীরভালোবাসাই প্রকৃত ভালোবাসা।
_আমিও।
_আমিও কি..?
_এতকিছু বুঝেন এইটা বুঝেন না..?
_না।
_ভালোবাসি।
_কাকে.?
_বোকা আপনাকে ছাড়া আর কাকেভালোবাসবো..?
_তোমার মুখ থেকে শুনবো বলে জেনেও নাজানার ভান করছি।
_কিহ…!!! শয়তান কোথাকার।
_আচ্ছা চলো খেয়ে আসি।
.
তারপর দুজনেই খেতে চললো। খাওয়া শেষেদুজনেই হাটতে হাটতে ছাদে গেলো। ছাদেরএক কোণায় অর্ণব উর্মিলার হাত ধরে বসেআছে। চাঁদের আলোতে পুরো শহরকে অন্যরকমলাগছে। আকাশের তারাগুলো মিটমিটকরছে। দুজনেরই ইচ্ছে করছে আজ রাত এখানেকাটিয়ে দিতে। কিন্তু এর মাঝেখানে
উর্মিলা বললোঃ-_এইযে এইভাবে হাত ধরে বসে না থেকে ঘুমোতে চলেন। রাত কয়টা বাজে সেদিকে
কি খেয়াল আছে..?
_আরেকটু থাকলে কি হয়.?
_এমনিতেই সকালে ঘুম থেকে উঠতে পারেননা তার উপর বেশি রাত করে ঘুমাইলেউঠতেই পারবেন না।
_কাল তো শুক্রবার অফিস বন্ধ।
_অহ, আচ্ছা তাইতো বলি আজ এখনো ঘুমোতেযাচ্ছেন না কেন।
_জ্বী, ম্যাডাম তাই।
_আমার না খুব ঘুম পাচ্ছে।
_আমার কোলে মাথা রেখে ঘুমাও।
_কিন্তু যদি সত্যি সত্যি ঘুমিয়ে পরি তখন
কি হবে..?
_কি আর হবে আমি তোমাকে কোলে করেরুমে নিয়ে যাবো।
_আপনিও না।
_লজ্জা পাচ্ছো। আচ্ছা ঠিক আছে চলোঘুমোতে যাই।
.
তারপর ছাদ থেকে দুজনেই নেমে সোজা রুমেআসলো। উর্মিলা ঘুমিয়ে পরছে অথচ অর্ণবেরচোখে কোনো ঘুম নেই। উর্মিলাকে বিয়েরপর কিছুই দিতে পারেনি। না একটা ভালোশাড়ী না কোনোদিন বাইরে ঘুরতে নিয়েযাওয়া। কেমনেই বা এসব কিনে দিবেছোটখাটো একটা চাকরী আর টিউশনি দিয়েকোনোমতে সংসার চলে। তবে এতেউর্মিলার কোনো আক্ষেপ নেই। বিয়েরগিফট দিয়েই চলে যাচ্ছে উর্মিলার আর
অর্ণবের ছোট্ট সংসার। উর্মিলাকে পেয়েসত্যিই অর্ণব অনেক সুখী। সুখ জিনিসটাআসলে টাকা দিয়ে হয় না সেটা উর্মিলাআর অর্ণবকে দেখলেই বুঝা যায়। এসব ভাবতেভাবতে অর্ণবও ঘুমিয়ে পরে।
.
সকালবেলা উর্মিলার আগে অর্ণব ঘুম থেকেউঠে পরলো। এতে আশ্চর্য হবার কিচ্ছু নাই।প্রতি শুক্রবার দিনে অর্ণব উর্মিলার আগেঘুম থেকে উঠে। এই ছুটির দিনে অর্ণব উর্মিলার যাবতীয় কাজ সে করে। ছেলে হয়েবাসনকোসন মাজা লজ্জার কিছু না।রান্নাবান্না করা লজ্জার কিছু না এতেদুজনের মিল-মহব্বত বাড়ে। যাইহোক তারপরএক পর্যায়ে উর্মিলা ঘুম থেকে উঠে দেখলোঅর্ণব তার পাশে নাই। বুঝতে আর বাকি রইলো না যে অর্ণব রান্নাঘরেরান্নাবান্না করছে। তারপর উর্মিলা উঠে রান্নাঘরে গেলো। বললোঃ-
_এইযে শুনছেন বলছি আজ কি রান্না হচ্ছে..?
_অহ তুমি, কখন ঘুম থেকে উঠছো..?
_মাত্র উঠলাম। আচ্ছা আজ কি রান্নাহচ্ছে..?
_আজ রান্না হচ্ছে তোমার ফেভারিটভুনাখিচুড়ি।
_ঘ্রাণ বলে দিতেছে অনেক মজা হবে যাইআমি ফ্রেশ হয়ে আসি।
_আচ্ছা যাও।
.
তারপর অর্ণব খাবার টেবিলে খাবারসাজিয়ে উর্মিলার জন্য বসে আছে। উর্মিলাসেই কখন ফ্রেশ হতে গেলো এখনো আসছেনা। অর্ণব বললোঃ-
_কি হলো ফ্রেশ হতে আর কতক্ষণ লাগবে..?
বাথরুম থেকে উর্মিলা একটু জোরে বললোঃ-_এইতো আসছি আর একমিনিট।
খাওয়ার মাঝে অর্ণব বললোঃ-_আজ সারাদিন আমরা ঘুরবো, খাবো তারপরবাড়ি ফিরবো।
_সত্যি..?
_হ্যা, সত্যি।
খাওয়া শেষে দুজনেই বাইরে ঘুরতে গেলো।উর্মিলাকে দেখে মনে হচ্ছে আজ অনেকখুশি। একটা মেয়ে যা চায় উর্মিলা ঠিক তাইতাই পেয়ে যাচ্ছে। এই খুশিতে উর্মিলারচোখের কোণায় জল আসলো।
.
সন্ধে বেলা অর্ণব আর উর্মিলা দুজনেই বাড়িফিরলো। এইভাবেই কেটে যায় তাদের ছুটিরদিন। কিন্তু প্রতিদিনের মত অর্ণব রাত করেবাড়ি ফেরাটা উর্মিলার কেমন জানিলাগে। আস্তে আস্তে উর্মিলা অর্ণবকে
সন্দেহ করতে থাকে। তার আরেকটা কারণহলো অর্ণবের কলিগ সে এত তাড়াতাড়িআসতে পারে তাহলে অর্ণব কেন এত দেরিতেআসে। এই জন্য সন্দেহের তীরটা আরোজোরালো হলো। উর্মিলা ভাবছে অর্ণব
অফিস ছুটির পর অন্য কোনো মেয়ের সাথেসময় অতিক্রম করে।
একদিন রাত করে বাসায়আসার পর উর্মিলা বলেই বসলোঃ-
_আমাকে ভালো লাগে না বললেই হয় আমিচলে যাই। উর্মিলার এমন কথায় অর্ণবেরমাথায় আকাশ ভেঙে পরলো।
_কি বললে তুমি..?
_কানে কি কম শুনেন..?
_তোমাকে ভালো লাগে না এইটা তুমিবলতে পারলে..?
_না পারার কি আছে। আপনি তো এখনঅন্যান্য মেয়েদেরকে সময় দেন আমাকে রাখছেন শুধু রান্নাবান্না করে দেওয়ারজন্য।
উর্মিলার এমন ভিত্তিহীন কথায় অর্ণবের খুবরাগ হয়। তাই অর্ণব উর্মিলাকে জোরে একটাথাপ্পড় মারে। সেদিনের পর থেকে অর্ণবকিছুটা ভেঙে যায়। তার ছোট্ট সংসারেআস্তে আস্তে ফাটল ধরতে লাগলো। এই
সংসারের জন্য দিনরাত কেটে যদি এসব কথাশুনতে হয় তাহলে সেই আশা কি আর থাকে।দুজনের কেউ কোনো কথা বলে। সেদিনের পরথেকে অর্ণব খাইছে কি না সেটা উর্মিলাজানতে চায় না। উর্মিলা খাইছে কি নাঅর্ণব জানতে চায় না।
.
সেদিনের পর থেকে অর্ণব ঠিক করলোটিউশনি ছেড়ে দিবে শুধু চাকরীটা করবে।যথারীতি অফিস শেষ করে টিউশনি করতেগেলো। গিয়ে আজ থেকে আর টিউশনিপড়াতে পারবে বলে সোজা বাড়ি আসলো।
অর্ণবকে এত তাড়াতাড়ি বাসায় আসতেদেখে উর্মিলা কিছুটা চমকে যায়। উর্মিলাভাবছে আজ থেকে অর্ণব আর মেয়েদেরকেসময় দিবে না। এদিকে আজ থেকে যে আরটিউশনি করা হবে না সেটা জানে না।
চাকরীর পাশাপাশি টিউশনি করা সংসারেউন্নতির জন্য আর ভবিষ্যৎ এর জন্য কিছুজমানো। কিন্তু উর্মিলা সেটাকে অন্যকিছুভেবে বসলো। পরেরদিন অফিসে যাওয়ারআগে অর্ণব মোবাইল ফোন রেখে বাথরুমে
গেলো আর এই ফাঁকে একটা ফোন আসলো।প্রথমবার রিসিভ করেনি। দ্বিতীয়বার ভয়েভয়ে ফোনটা রিসিভ করলো।
_স্যার প্লিজ প্লিজ আপনি আমাকে পড়ানোছেড়ে দিয়েন না। স্যার সামনে আমারপরিক্ষা আপনি না পড়াইলে আমি পাশকরতে পারবো না। স্যার আজ সন্ধে বেলায়আসবেন প্লিজ। একটা ছেলে এই কথা গুলোবললো। তখন উর্মিলার মুখ দিয়ে শুধু এইকথাটাই বের হলো।
_আমি স্যার না। বলেই হাত থেকে ফোনটাধপাস করে বিছানায় পরে গেলো। উর্মিলাবোবাদের মত তাকিয়ে আছে। অর্ণবকে শুধুশুধুভুল বুঝলো।

 প্রতিদিন কেন রাত করে বাড়িফিরতো সেটা আজ উর্মিলা জেনে গেলো।অর্ণব বাথরুম থেকে বের হয়ে ফোনটা হাতেনিতেই উর্মিলা অর্ণবের আরেক হাত ধরেবললোঃ-_আমাকে মাফ করে দিন।
_কিসের জন্য..?
_অযথা ভুল বুঝার জন্য।
_মানুষ মাত্রই ভুল।
_জানি কিন্তু আপনি তো জানেন আমিআপনাকে অনেক ভালোবাসি বলেই সন্দেহকরি।
_জানি মেয়েরা তার প্রিয় মানুষকে অন্যকোনো মেয়ের সাথে মিশতে দিতে চায়না। তবে ছেলেরা যে তার প্রিয় মানুষরেখে অন্য আরেকটা মেয়ের সাথেমেলামেশা করে সেই সন্দেহটা একদম ভুল।
_ভুল হইছে এইবার মাফ করে দিন।
_দিলাম।
_এইবার একটু হাসুন।
_হাসলাম।
_এইবার লক্ষী ছেলের মত অফিসে যান।
_গেলাম।
_এইবার কিন্তু বেশি হয়ে যাচ্ছে।
_আচ্ছা যাচ্ছি।
_এই এই লাঞ্চের খাবার নিবেন না..?
_একদম ভুলে গেছি।
_এই ধরেন। আর।
_বলতে হবে না। লাঞ্চের সময় হলে অফিসেরকাজ রেখে খাওয়ার কাজ শেষ করবো
এইতো..?
_হুম…...
.
এইভাবেই কেটে যাচ্ছে অর্ণব আর উর্মিলারছোট্ট সংসার। মাঝেমধ্যে রাগ, অভিমানদিনশেষে ভালোবাসা দিয়ে সুখে,স্বাচ্ছন্দ্যে কেটে যাচ্ছে তাদের দাম্পত্যজীবন। সুখ এমন একটা জিনিস বিশাল বাড়ি-গাড়ি অট্টালিকায় থাকলে যে সুখ পাওয়াযায় না সেই সুখ ছোট্ট কুড়েঘরে থেকেওপাওয়া যায়। সুতরাং টাকাপয়সা-বাড়িগাড়ি কাউকে সুখ দিতে পারে না। একটাসম্পর্কের মাঝে ভুল বুঝা বুঝি হতেই পারে
তাই বলে সম্পর্ক বিচ্ছেদ করার আগে ভেবেদেখা উচিত। মানুষ মাত্রই ভুল কথাটামানতে হবে। আমরা সবাই ভুল করি কেউ আজ ন কেউবা কাল। আর সন্দেহ। মানুষ সন্দেহকরে তার প্রিয় মানুষটিকে। মেয়ে ভাবে নাজানি আমার উনি কোন মেয়ের সাথেইটিসপিটিস করতেছে। ছেলে ভাবে নাজানি আমার ইয়েটা কোনো ছেলের সাথেফস্টি নস্টি করতেছে। এসব সন্দেহ মনেমনেকরাই শ্রেয়। ভালোভাবে না জেনে সন্দেহকরা আর আন্দাজি ঢিল মেরে গাছ থেকেআম পারা একই কথা।

No comments:

Post a Comment

comment

Contact Us

Name

Email *

Message *