ভালোবাসা পাওয়ার চাইতে ভালোবাসা দেওয়াতেই বেশি আনন্দ।

Friday, May 18, 2018

পবিত্র ভালবাসা

valobashar golpo, ভালোবাসার গল্প, প্রেমের গল্প, ভালবাসার গল্প
-আসবা না।
-না।
-আজকের দিনে এমন কোরো না।
-আমি এমনি।
কথাটি বলেই সুপ্তি ফোনটা কেটে দিল।সাথে সাথে আমার মনটাও বেশ খারাপ হয়ে গেলো।
'
অফিস থেকে বের হয়ে মাত্রই রিক্সায় চেপে বসেছি তখনি ফোনটা বেজে উঠলো।আমি ফোনটা বের করতেই দেখি সুপ্তির ফোন।আমি ফোন ধরতেই সুপ্তি বললো,
-কালকের দিনের কথা মনে আছে তো।
সুপ্তির কথায় আমি একটু চিন্তায় পড়ে গেলাম।আসলে ভুলে যাওয়াটা আমার কেমন যেন নেশা হয়ে গেছে।কোন কিছুই মনে রাখতে পারিনা।আমি সুপ্তিকে বললাম,
-হু আছে তো।কাল শবে বরাত।অফিস ছুটি।
-তুমি আবার ভুলে গেছো।কাল আমাদের বিয়ের এক বছর হবে।
-ও এটা তো আমার মনে ছিল।
-মনে ছিল। বিরিয়ানির জন্যে যে মাংস কিনতে বলছিলাম ,কিনছো?
এই রে এবার মনে হচ্ছে ধরা পড়ে গেলাম।মনেই ছিল না।আমি বললাম,
-হ্যা,আসলে কাল তো শবে বরাত।আর এই সব ম্যারেজ ডে পালন ও করতে হয় না।তাই আর কেনা হয়নি।তারচেয়ে বরং ময়দা নিয়ে আসি।দুজনে বেশ মজা করে রুটি খাবো।
'
সুপ্তি আমার কথায় কিছু বললো না।মনে হচ্ছে এইবার কাজ হয়েছে।সুপ্তি কিছুক্ষন চুপ থেকে বেশ রাগি কণ্ঠে বললো,
-তুই সবকিছু ভুলে গিয়েছিস।তাই এসব বাহানা করছিস আমার সাথে।তুই থাক তোর ময়দা নিয়ে।
কথাটি বলেই সুপ্তি ফোনটা কেটে দিল।মেয়েটা বেশ ভালই রেগে গেছে।খুব সহযেই মেয়েটা রাগ করে না,কিন্তু আজ কি হলো বুঝলাম না।হয়তো খুব আশা করেই ছিল।
আমি আর সুপ্তিকে ফোন দিলাম না।বাসায় গিয়ে এখন রাগ ভাঙাতে বেশ কষ্টই হবে।
"
স্যার, এই নেন চাবি।
'
গেইট দিয়ে ঢুকতেই দারওয়ান চাচা চাবি এগিয়ে দিয়ে কথাটি বললো।আমি চাবিটা নিতেই উনি আবারও বললেন,
-ম্যাডাম কি আবার চলে গেলো?
দারওয়ান চাচার কথায় আমি মুচকি হেসে কিছু না বলে চলে আসলাম।আসলে সুপ্তি রেগে গেলেই বাবার বাসায় চলে যাবে।আর যাওয়ার সময় দারওয়ান চাচার কাছে চাবি দিয়ে যাবে।
দারওয়ান চাচাও বেশ আপডেট দেখছি।অল্পতেই সবকিছু বুঝে যায়।আমি রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে সুপ্তিকে ফোন দিলাম।একি ফোন বন্ধ।এই মেয়েটা দেখি আজ অনেক বেশীই রেগে গেছে।
"
আমি ফোনটা রাখতেই শ্বাশুড়ি আম্মার ফোন এসে হাজির।আমি ফোন ধরতেই উনি বললেন,
-আবারও।
-হুম।
-কিসের জন্যে?
-মাংস কিনতে ভুলে গিয়েছিলাম।
-কবে যে আমার মেয়েটাকেই ভুলে যাও আল্লাহই জানে।
-সুপ্তিকে একটু বুঝিয়ে পাঠিয়ে দিন না।
-এক বছর হলো এটাই তো আমার কাজ হয়ে গেছে।দেখি কিছু করতে পারি কিনা।বেশ ভালই রেগে আছে।
-আচ্ছা দেখুন একটু।
কথাটি বলেই আমি ফোনটা রেখে দিলাম।এটাও রুটিন হয়ে গেছে।সুপ্তি রাগ করে চলে গেলে শ্বাশুড়ি আম্মা ফোন দেবেই।আর প্রতিবারের মত কারন জানতে চাইবে।
'
আসলে সুপ্তি যেমন রাগ করে তার চেয়ে বেশী আমাকে ভালবাসে।মেয়েটার
মনটা খুব ভালো।ওকে ছাড়া তো আমার ঘুম ও হবে না।কোলবালিশটা কি বের করবো।না থাক।সুপ্তি এসে যদি দেখে ওর জায়গায় কোলবালিশ তাহলে রাগ করে আবার চলে যেতে পারে।
"
সকালে আবার সুপ্তিকে ফোন দিলাম।দেখি রাগ কমলো নাকি।কিন্তু সেই একই কথা,আসবে না।
"
কিছু না খেয়ে আবার ঘুমিয়ে পড়লাম।আজ শবে বরাত।নামাজের রাত।রাত জেগে নামাজ পড়তে হবে তো।
কলিংবেলের শব্দে ঘুমটা ভেঙে গেলো।উফ এখন আমার কে।আমি ঘুম ঘুম চোখে দড়জাটা খুলতেই দেখি সুপ্তি দাঁড়িয়ে। আমি কিছু বলার আগেই সুপ্তি রুমে এসে বললো,
-এখনও ঘুমাচ্ছ।সকালে খাওনি মনে হচ্ছে।
-আসলে মনে ছিল না।
-আমার কথায় সুপ্তি এবার বেশ জোরেই হেসে দিয়ে বললো,
-খাওয়ার কথাও ভুলে যাও।যাও ফ্রেশ হয়ে আসো।
আমি ফ্রেশ হয়ে আসতেই সুপ্তি বললো,
-কি ভেবেছিলে,আজ সারাদিন ঘুমেই কাটিয়ে দেবে।
-এসব কিছু না।
-জানি আমি।আমি না আসলে তো নামাজেও যেতে না।এখন আমি এসে গেছি।নামাজ ফাকি দেওয়ার কোন চান্স নেই।রাত জেগে নামাজ পড়তে হবে।
-হ্যা,পড়বো তো।আচ্ছা তুমি একটু বসো আমি মাংস নিয়ে আসি।কথাটি বলেই আমি দড়জার দিকে এগুতেই সুপ্তি আমাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলো।আমি ওর হাত ধরে বললাম,
-সরি।
-মাংস আনতে হবে না।আর এসব ম্যারেজ ডে পালন ও করতে হবে না।এগুলা করতে হয় না।
সুপ্তির কথায় কেমন যেন ভাল লাগা কাজ করলো।তারমানে মেয়েটা তাহলে এখন সবকিছু বুঝতে পেরেছে।আমি এবার সুপ্তিকে পেছন থেকে সামনে এনে বুকে জড়িয়ে নিয়ে বললাম,
-ভালবাসি বউটাকে।
-অনেক ভালবাসি বরটাকে।অনেক ভালবাসি,কথাটি বলেই সুপ্তি আমাকে বেশ শক্ত করেই জড়িয়ে ধরলো।বেশ শক্ত করেই।

  Abdul Ahad(অলস বালক)

No comments:

Post a Comment

comment

Contact Us

Name

Email *

Message *