স্টেশনের বেঞ্চে বসে ছেলে আর মেয়েটা প্রায় এক ঘণ্টার কথোপকথন শেষ করল। মেয়েটা বলছিল কম। শুধু শুনছিলো।
আর যদিও বা দু'একটা কথা বলছিলো, তা শুনে সাথে সাথেই ছেলেটাকে বারবার উত্তেজিত হয়ে যেতে দেখছিলাম।
খেয়াল করে দেখলাম, মেয়েটা কথাগুলো যত আস্তে বলছে, ছেলেটা ঠিক তার উলটো! সে আরো বেশী উচ্চস্বরে।
মেয়েটা কিছুক্ষণ পর পর টিস্যু দিয়ে চোখ মুচ্ছিলো। অথচ, ছেলেটা নির্বিকার! তার মত করে বলেই যাচ্ছে।
আরো কিছুটা সময় পর,
ছেলেটা উঠে দাঁড়িয়ে বলল, আমার ট্রেনের সময় হয়ে গেছে! যাচ্ছি আমি। ভালো থেকো।
মেয়েটা কিছু বলতে যাচ্ছিল। কিন্তু, পারল না। ছলছল চোখে তাকিয়ে আছে ছেলেটার চোখের দিকে।
হয়তো, মেয়েটা এ চোখেই একদিন তার প্রতি তীব্র ভালোবাসা দেখেছিল। কিংবা, তাকে পাবার আসমুদ্র তেষ্টা! অথচ, আজ সে চোখেই খুঁজে পাচ্ছে তার প্রতি বিরক্তি, ক্ষোভ কিংবা প্রচণ্ড ঘৃণা।
ছেলেটা ব্যাগ কাধে নিয়ে ঘুরে দাঁড়ালো। এক পা এগুতেই মেয়েটা পিছন থেকে তার হাত ধরে ফেলল। ছেলেটা কিছু মুহুর্ত থমকে দাঁড়াতে বাধ্য হলো!
ছেলেটা জানে, এই হাত ধরার মানে কী। কিন্তু, সে অনড়। শেষবারের মত হয়তো মেয়েটার মুখের দিকে একবার তাকালো সে!
মেয়েটার চোখে তখন অঝোর শ্রাবণ! সে ভেবেছিল, ছেলেটা হয়তো তার চোখের দিকে একবার তাকালে তা আর উপেক্ষা করতে পারবেনা। চলে যেতে পারবেনা তাকে ছেড়ে।
কিন্তু, ছেলেটা মেয়েটার থেকে হাত ছাড়িয়ে নিয়ে ট্রেনের দিকে পা বাড়ালো। মেয়েটা আর সে দিকে তাকিয়ে থাকার সাহস পেলো না। পিছন ফিরে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে শুরু করল। ওদিকে ছেলেটা উঠে গেল তার নিজস্ব কামরায়।
হঠাৎ তীব্র শব্দে ট্রেনের হুইসেল বেজে উঠলো। আর মেয়েটার ভেতরে পৃথিবী ভাঙার। আস্তে আস্তে ট্রেনটা স্টেশন ত্যাগ করতে শুরু করল।
মেয়েটার কান্নার মাত্রা তীব্র থেকে আরো তীব্রতর হচ্ছে। ট্রেনের শব্দে সেই কান্নার আওয়াজ কেউ শুনতে পাচ্ছেনা। আমিও না। শুধু দুরের এই টং দোকানের ভাঙা টেবিলে বসে তা দেখতে পাচ্ছি।
ট্রেন প্লাটফর্ম ছেড়ে চলে গেলে, মেয়েটা একবার সেদিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলল। এখন আর সে কাঁদছে না। চোখের কোণে জমে থাকা জলটুকু মুছে নিয়ে, ধীরে ধীরে প্লাটফর্মের গেটের দিকে এগিয়ে গেল সে। যেতে যেতে মিশে গেল ঘরে ফেরা মানুষের ভিড়ে।
চোখের সামনে এমন দৃশ্য দেখার পর, আমার চোখ দিয়ে দুফোঁটা জল গড়িয়ে পরলো, আমার চায়ের নেশাটা উবে গেল। কাপের অবিশিষ্ট চাটুকু ফেলে দিলাম।
তারপর হাঁটা ধরলাম রেল লাইনের স্লিপার ধরে! এই ভুল শহরে আরেকটা ভুল প্রেমের করুণ পরণতিতে তখন একটা কথাই বারবার মনে পড়ছিল।
এ শহর শুধু চোখ ভিজিয়েই দিতে পারে,
মুছে দিতে নয়।
আর যদিও বা দু'একটা কথা বলছিলো, তা শুনে সাথে সাথেই ছেলেটাকে বারবার উত্তেজিত হয়ে যেতে দেখছিলাম।
খেয়াল করে দেখলাম, মেয়েটা কথাগুলো যত আস্তে বলছে, ছেলেটা ঠিক তার উলটো! সে আরো বেশী উচ্চস্বরে।
মেয়েটা কিছুক্ষণ পর পর টিস্যু দিয়ে চোখ মুচ্ছিলো। অথচ, ছেলেটা নির্বিকার! তার মত করে বলেই যাচ্ছে।
আরো কিছুটা সময় পর,
ছেলেটা উঠে দাঁড়িয়ে বলল, আমার ট্রেনের সময় হয়ে গেছে! যাচ্ছি আমি। ভালো থেকো।
মেয়েটা কিছু বলতে যাচ্ছিল। কিন্তু, পারল না। ছলছল চোখে তাকিয়ে আছে ছেলেটার চোখের দিকে।
হয়তো, মেয়েটা এ চোখেই একদিন তার প্রতি তীব্র ভালোবাসা দেখেছিল। কিংবা, তাকে পাবার আসমুদ্র তেষ্টা! অথচ, আজ সে চোখেই খুঁজে পাচ্ছে তার প্রতি বিরক্তি, ক্ষোভ কিংবা প্রচণ্ড ঘৃণা।
ছেলেটা ব্যাগ কাধে নিয়ে ঘুরে দাঁড়ালো। এক পা এগুতেই মেয়েটা পিছন থেকে তার হাত ধরে ফেলল। ছেলেটা কিছু মুহুর্ত থমকে দাঁড়াতে বাধ্য হলো!
ছেলেটা জানে, এই হাত ধরার মানে কী। কিন্তু, সে অনড়। শেষবারের মত হয়তো মেয়েটার মুখের দিকে একবার তাকালো সে!
মেয়েটার চোখে তখন অঝোর শ্রাবণ! সে ভেবেছিল, ছেলেটা হয়তো তার চোখের দিকে একবার তাকালে তা আর উপেক্ষা করতে পারবেনা। চলে যেতে পারবেনা তাকে ছেড়ে।
কিন্তু, ছেলেটা মেয়েটার থেকে হাত ছাড়িয়ে নিয়ে ট্রেনের দিকে পা বাড়ালো। মেয়েটা আর সে দিকে তাকিয়ে থাকার সাহস পেলো না। পিছন ফিরে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে শুরু করল। ওদিকে ছেলেটা উঠে গেল তার নিজস্ব কামরায়।
হঠাৎ তীব্র শব্দে ট্রেনের হুইসেল বেজে উঠলো। আর মেয়েটার ভেতরে পৃথিবী ভাঙার। আস্তে আস্তে ট্রেনটা স্টেশন ত্যাগ করতে শুরু করল।
মেয়েটার কান্নার মাত্রা তীব্র থেকে আরো তীব্রতর হচ্ছে। ট্রেনের শব্দে সেই কান্নার আওয়াজ কেউ শুনতে পাচ্ছেনা। আমিও না। শুধু দুরের এই টং দোকানের ভাঙা টেবিলে বসে তা দেখতে পাচ্ছি।
ট্রেন প্লাটফর্ম ছেড়ে চলে গেলে, মেয়েটা একবার সেদিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলল। এখন আর সে কাঁদছে না। চোখের কোণে জমে থাকা জলটুকু মুছে নিয়ে, ধীরে ধীরে প্লাটফর্মের গেটের দিকে এগিয়ে গেল সে। যেতে যেতে মিশে গেল ঘরে ফেরা মানুষের ভিড়ে।
চোখের সামনে এমন দৃশ্য দেখার পর, আমার চোখ দিয়ে দুফোঁটা জল গড়িয়ে পরলো, আমার চায়ের নেশাটা উবে গেল। কাপের অবিশিষ্ট চাটুকু ফেলে দিলাম।
তারপর হাঁটা ধরলাম রেল লাইনের স্লিপার ধরে! এই ভুল শহরে আরেকটা ভুল প্রেমের করুণ পরণতিতে তখন একটা কথাই বারবার মনে পড়ছিল।
এ শহর শুধু চোখ ভিজিয়েই দিতে পারে,
মুছে দিতে নয়।
No comments:
Post a Comment
comment