ভালোবাসা পাওয়ার চাইতে ভালোবাসা দেওয়াতেই বেশি আনন্দ।

Saturday, June 23, 2018

বিবাহ অভিযান

ভালোবাসার গল্প, ভালবাসার গল্প, প্রেমের গল্প, valobashar golpo, premer golpo, love story

:- আচ্ছা তোর কষ্ট হচ্ছে না? ( কৃষ্টি)
:- কষ্ট পেলেও বা কি হবে বল? আমার দ্বারা কিছু সম্ভব হবে না এখন আর। আমার জন্যই কিন্তু আঙ্কেল কয়েক মাস অপেক্ষা করেছিল। এখন আর কোন মুখে উনার সামনে যাব? (রুহান)
:- চল না পালিয়ে যাই। তুই ছাত্র পড়াবি আর আমি কাপড় সেলাই করব, দেখবি খুব সুন্দর করে আমাদের সংসার চলবে। (কৃষ্টি)
:- পাগল হয়ে গেলি নাকি? যে মানুষগুলো এতো বছর নিঃস্বার্থ ভাবে তোকে লালন-পালন করল তাদের কথা একবারও ভাবলি না? আরে তারা তো তোর খারাপ চায় না। তারা চায় তুই যাতে রাজকুমারির মতো থাকতে পারিস, সব ধরনের সুখ পেতে পারিস, যেগুলো আমি তোকে দিতে পারব না। তুই কাঁদিস না প্লিজ, বিয়েতে রাজী হয়ে যা, তোকে আমার দিব্ব্যি। (রুহান)
:- ঠিক আছে। তবে এক শর্তে, তোকেও বিয়েতে থাকতে হবে। তুই আমার সুখ দুঃখের সাথী ছিলি এতোদিন। (কৃষ্টি)
:- আচ্ছা থাকব। শেষবারের জন্য একটু বুকে ধরবি? (রুহান)
:- আয়। (কৃষ্টি)
.
কিছুক্ষন বাহুবেষ্টনীতে থেকে কৃষ্টি নিজেকে ছাঁড়িয়ে নেয়। তারপর রুহানকে বিদায় জানিয়ে চলে আসে বাড়ি। সে নিজেকে শক্ত করে রেখেছে, সে জানত তাকে এমন একটি দিনের সন্মুখীন হতে লাগবে।
.
বিয়ের দিন ক্রমাগত এগিয়ে আসছে। কৃষ্টির মনও চঞ্চল হয়ে উঠছে, তার কিছুই ভালো লাগছে না। এখনও সে তার হবু বরের সাথে কথা বলে নি। যার বিয়েতেই মন নেই সে বরের প্রতি কি মন দেবে? যাই হোক বিয়ের আর মাত্র পাঁচ দিন বাকি, নিমন্ত্রণ হয়ে গেছে সব, বিয়ের সব কাজ প্রায় শেষ, ঠিক তখনি কৃষ্টি জানতে পারে রুহানের চাকরি হয়ে গেছে। এখন কি করা যায়, যে করেই হোক বিয়ে আটকানোর একটা ব্যবস্থা করতেই হবে। সে তার এক বন্ধু আর ভাইকে ডেকে এনে একটি প্ল্যান করে। বিয়ের দিন অভ্যাগতরা সবাই একে একে আসছে, কৃষ্টি সেখানে রুহানকে দেখতে পায়, আর মনে মনে বলে তোর ঘারেই লটকাব মনে রাখিস।

এদিকে জামাই আনার জন্য গাড়ি নিয়ে যাচ্ছে অধরার ভাই আর বন্ধুটি, প্ল্যান অনুসারে ড্রাইভার গাড়ির তেল কমিয়ে আনে যাতে অর্ধেক রাস্তায় গাড়ি আটকে পরে। জামাই আনার সময় বরযাত্রীর গাড়িগুলো একটু আগে আগে চলে যায়, আর জামাইএর গাড়ি পিছিয়ে পরে। শেষে মাঝরাস্তায় গাড়ির তেল শেষ হয়ে যায়, প্ল্যান পুরো সাক্সেস। অনেকটা সময় হয়ে গেল জামাই আসছে না দেখে সবাই চিন্তায় পরে গেল, একের পর এক ফোন করতে থাকে কিন্তু কারোর ফোন লাগছে না। এদিকে লগ্ন প্রায় শেষের পথে, কৃষ্টির বাবার প্রায় কাঁদো কাঁদো মুখে বসে আছে, মেয়েটার মাথায় লগ্নভ্রষ্টার কলঙ্ক চাপবে না তো এই চিন্তা উনাকে অসহায় করে তুলছে। রুহান আস্তে আস্তে এগিয়ে আসে কৃষ্টির বাবার কাছে, সামনে গিয়ে দাঁড়ায়, রুহানকে দেখে উনি তৎক্ষনাত দাঁড়িয়ে পরেন, আর হাত জোড় করে বলেন, "বাবা কৃষ্টির সন্মান এখন তোমার হাতে, তুমি যদি চাও তাকে নিজের করে নিতে পার এর বেশি কিছু বলতে পারব না।"

তখন কৃষ্টির সাথে যার বিয়ে হওয়ার কথা ছিল তার বাবা রুহানকে বিয়ের মন্ডপে নিয়ে আসে এবং কৃষ্টিকে রুহানের হাতে তোলে দেয়। সময়ের মধ্যে বিয়েটা হয়ে যায়। বিয়ের পর কৃষ্টির বাবাকে রুহান প্রণাম করতে গিয়ে বলে, "আঙ্কেল আপনার মেয়ের কোনো কষ্ট হবে না, চাকরিটা আমি পেয়ে গেছি।"

  লেখাঃ Abokash Sharma Ruhan (ছদ্মবেশী)

No comments:

Post a Comment

comment

Contact Us

Name

Email *

Message *