ভালোবাসা পাওয়ার চাইতে ভালোবাসা দেওয়াতেই বেশি আনন্দ।

Monday, May 20, 2019

এটা একটা প্রেমের কাহিনি-৮

ভালোবাসার গল্প, প্রেমের গল্প, ভালবাসার গল্প, love story, valobashar golpo
রাধা= মানে?
হালিম= এটা আমার ডায়রি না, তোমার ও না, এটা নাভিদের ডায়রি।
রাধা= নাভিদের ডায়রি আমাকে দিচ্ছ কেন? তুমি জানোনা অন্যের
বিনা অনুমতিতে পড়া অনৈতিক কাজ?
হালিম= যদি সেই ডায়রির প্রত্যেকটা পাতায় লেখা থাকে তোমার
নাম, প্রত্যেকটা লাইনে লেখা থাকে তোমার কথা, তাহলে আমি মনে করি সেই ডায়রি একবার হলেও তোমার দেখার অধিকার আছে।
রাধা= নাভিদের ডায়রিতে আমার নাম কেন!! বিস্ময় ভরা কণ্ঠে
জিজ্ঞেস করে রাধা, পরক্ষনেই নিজেকে সামলিয়ে আবার বলতে শুরু করে রাধা= ও… জানি, কি লেখে আমাকে নিয়ে। আমাকে কিভাবে কষ্ট দিল, কিভাবে আমার মনে আঘাত করল, এগুলোই তো লেখবে। বলতে বলতে রাধার চোখ অশ্রুতে ছলছল করে উঠলো।
হালিম= তুমি শুধু নাভিদের বাইরের টাই দেখেছো, পাথরের মত
কঠিন। ভিতর টা কখনোই দেখনি।


রাধা ডায়রিটা খোলে, প্রথম পৃষ্ঠায় একটা ফটোর উপরে রাধার চোখ
আটকে যায়, খুবি পুরনো একটা ফটোগ্রাফ। রাধার চোখ ছলছল
করে উঠে, চোখে অশ্রু টলমল করতে থাকে। কান্না আটকে 
রাখার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়, ফটোগ্রাফ এর উপর হাত রেখে ফুপিয়ে
কাদতে শুরু করে। টয়া আর আইরিন রাধার দুইপাশে দাঁড়িয়ে ফটো
টা দেখে কিছু বুঝার চেষ্টা করে কিন্তু ব্যর্থ হয়, দুজনেই 
একযোগে রাধাকে প্রশ্ন করে ফটোগ্রাফ টা কার? কাদতে কাদতে রাধার গালের দুপাশ এবং নাকের ডগা লালবর্ণ ধারন করে। রাধা চোখের পানি মুছতে মুছতে উত্তর করে
‘এটা আমার বাল্যকালের ছবি’

রাধা ডায়রিতে  পুরনো দিনের কথা পড়ে কখন কাদছে আবার
কখন নাভিদের সাথে নিজের মিষ্টি খুনসুটির কথা পড়ে হাসছে।
রাধা অঝোরে কাঁদছে, গাল গড়িয়ে অশ্রু পরছে কিন্তু এই কান্না
আনন্দের।রাধার রাধার কাছে সবসময়ই মনে হত নাভিদ ওকে
ভালোবাসে, কিন্তু বাস্তবতা বরাবরই উল্টো ছিল। কিন্তু আজ রাধার
অতিত সাক্ষী দিতে এসেছে, নাভিদ রাধাকে ভালোবাসে, অনেক
ভালোবাসে। রাধা কাপতে থাকে,সমস্ত শরীর আনন্দে শিহরিত হতে
থাকে, কথা বলতে গিয়েও আটকে যায়। কাপা কাঁপা কণ্ঠে রাধা বলে
উঠে= আমি জানতাম নাভিদ আমাকেভালোবাসে, ও যতই মুখে
না করুক, আমার মন বলত নাভিদ আমাকে ভালোবাসে।
আইরিন= আমি তো আগে থেকেই জানতাম, তোর আর নাভিদের
মধ্যে কিছু একটা আছে। তুই নাভিদের সামনে গেলে পৃথিবীর
সবকিছু ভুলে যাস, আর নাভিদ তোর সামনে আসলে কেমন 
ভিলেনের ভাব নেয়।
রাধা= নাভিদ এখন কোথায়? হালিম কে জিজ্ঞেস করে।
হালিম= এখনো বাংলাদেশেই আছে, তবে বেশিদিন নাই।
মালয়েশিয়া উড়াল দেয়ার প্ল্যান করছে নাভিদ।
রাধা= আমি একবার নাভিদ কে হারিয়েছি, আর না, আর নাভিদ
কে হারাতে দিবনা।


***
নাভিদের দেয়া শাড়ি টা পরেই আজ নাভিদের সাথে দেখা করবে
রাধা। হ্যা, জন্মদিনের কোন এক অজানা লোকের দেয়া শাড়িটা
নাভিদের ই দেয়া, এটা বুঝতে রাধার আর বাকি নেই। গিফটের
প্যাকেট থেকে শাড়িটা বের করে ভাজ খুলতেই তা থেকে একটা
চিরকুট নিচে পরে। চিরকুট টা হাতে নিয়ে রাধা পরতে শুরু করে।
রাধা, তোমাকে কিছু কথা বলার ছিল। আমার পরিচয় খুব একটা
গুরুত্বপূর্ণ না, তাই আমার নাম উল্লেখ করলাম না। আমার কাছে
তোমার ভালো থাকাটাই গুরুত্বপূর্ণ। সব সময় নিজের যত্ন নিবে,
তোমার সবচেয়ে বর দুর্বলতা তুমি অন্যের সমস্যায় জড়িয়ে পর।
কখনো অন্যের সমস্যায় নিজেকে জড়াবেনা, অন্যের কারণে
নিজেকে সমস্যায় ফেলবেনা। কেউ যদি তোমার জীবন থেকে চলে
যায় তার জন্য কষ্ট পেয়োনা। খুব প্রশ্ন কর, আজকে থেকে প্রশ্ন
কম করবে আর হাসবে বেশি। তোমার জীবনে হয়ত আমি ছিলাম
হয়ত ছিলাম না, কিন্তু আজকের পর  থেকে তোমার জীবনে আর
আসবোনা এটা নিশ্চিত।
ইতি
তোমার কোন এক শুভাকাঙ্ক্ষী

No comments:

Post a Comment

comment

Contact Us

Name

Email *

Message *