ভালোবাসা পাওয়ার চাইতে ভালোবাসা দেওয়াতেই বেশি আনন্দ।

Monday, December 25, 2017

প্রেমপত্র- এটা একটা প্রেমের কাহিনী ৪থ পর্ব







হালিম= স্যার আপনাকে অনেকক্ষণ যাবত খুজতাছি।
জহির স্যার= আমাকে খুজো কি কারণে??
হালিম= স্যার আমাকে একটা প্রেমপত্র লিখে দেয়া লাগবে।
জহির স্যার= কেন তুমি নিজে লিখতে পারো না
হালিম= স্যার প্লিজ একটু হেল্প করেন, আমার জীবন মরণের প্রশ্ন।
জহির স্যার= ওকে, চিঠি দিবা কাকে
হালিম= বাংলা বিভাগের  পারভিনরে
জহির স্যার= ওকে যাও, আমাকেও একটা রিজাইনিং লেটার লেখতে হবে
হালিম= কেন স্যার??
জহির স্যার= তুমি ক্লাসে যাও আমি তোমাকে পরে বলবো।


 যহির স্যার লাইব্রেরীতে বসে বসে একটা প্রেমপত্র লিখতে শুরু করে। হরিণীর মত টানা টানা চোখ তোমার, দুধে আলতা গায়ের বরন, কমলার কোয়ার মত নরম ঠোঁট।  এমন কাব্যিক কতগুলো বাক্য দিয়ে হালিমের জন্য একটা প্রেমপত্র লিখে।  তারপর নিজের রিজাইনিং লেটার লেখতে শুরু করে, আসলে এটা কে রিজাইনিং লেটার বললে ভুল হবে বলতে হবে গালির মিসাইল। যে পড়বে সেই হার্ট অ্যাটাক করবে।


 লেটার টা ছিল ঠিক এমন
রাক্ষস রানী কটকটি, খারাপ আত্মা ডাইনি, সারারাগুল সোফান ইজবা, কুটনা বুড়ি তরে দেখলে বাচ্চারাও হার্ট অ্যাটাক কইরা মরবো। তুই হইলি লাস্ট সেঞ্চুরির ডাইনোসর, চলতি ফিরতি বুলডোজার, নীল তিমির লাস্ট জেনারেশন, হাতির আণ্ডা, তুই হইলি একটা নকল,  তোর প্ল্যাস্টিকের দাতের খিটখিট হাসি দেখলে মরা মানুষও হার্ট অ্যাটাক করবো, তোর মুখ দর্শন করার চেয়ে এই কলেজ থেকে বিদায় নেয়াও অনেক ভালো । টুট টুট টুট ***


 যহির স্যার একটা চিঠি হালিমের হাতে দিয়ে আরেকটা চিঠি নিজের পকেটে রেখে ক্লাস রুমে প্রবেশ করে। সবাই দাঁড়িয়ে যায়, জহির স্যার সবাইকে বসিয়ে বলতে শুরু করে। = দেখ এই পৃথিবীতে কেওই চিরস্থায়ী নয় সবাইকেই একদিন না একদিন যেতে হয়। আমাদেরকেও যেতে হবে। আমি তোমাদের কলেজে জয়েন্ট করেছিলাম একজন টেম্পোরারি শিক্ষক হিসেবে, আমাকে বলা হয়েছিল যদি আমার কাজে প্রেন্সিপ্যাল মেডাম খুশি হয় তাহলে পার্মানেন্ট করা হবে, তা না হলে আমাকে বিদায় করে দেয়া হবে। মনে হয়না তোমাদের প্রিন্সিপ্যাল মেডাম আমার উপরে খুশি, তাই আমাকে চলে যেতে হবে।  

এমন সময় রাঁধা বলে উঠে= স্যার আপনে আমাদেরকে ছেড়ে চলে যাবেন!!! আমরা আপনাকে খুব মিস করবো।
যহির স্যার= আমিও তোমাদেরকে খুব মিস করবো। তবে একটা খুশির খবর হল আমি পঁচিশ লক্ষ টাকার একটা লটারি পেয়েছি, আজকের পত্রিকায় লটারির নাম্বার প্রকাশিত হয়েছে। ভাবছি আমি নিজেই একটা ব্যাবসা শুরু করবো।
 কথাটা বলে রবিন কে সামনে ডাক দেয় জহির স্যার= রবিন এদিকে আসো
রবিন= জি স্যার
জহির স্যার= এই লেটার টা প্রিন্সিপ্যাল মেডামের ডেস্কের উপর রেখে দিয়ে আসবে।
রবিন= জি স্যার


 রবিন সাথে সাথে লেটার টা নিয়ে প্রিন্সিপ্যাল এর রুমের দিকে হাটা শুরু করে আর মনে মনে বলতে থাকে= মরার বুড়ি এক ঠ্যাং কবরে আরেক ঠ্যাং কলার ছিলকার উপরে তাও আমাদেরকে জালায়া খাইতাছে


নাভিদ= স্যার আপনের লটারির নাম্বার কত?
জহির স্যার= 666666666666
নাভিদ= কিন্তু স্যার পত্রিকায় তো অন্য নাম্বার দেয়া
জহির স্যার= মানে
নাভিদ= এইযে দেখেন স্যার 666666696666
জহির স্যার= কোথায় দেখি
নাভিদ= এই খানে একটা নাইন আছে, কিন্তু আপনার নাম্বারে কোন নাইন নাই।
জহির স্যার= হায় হায় কি বল!! তাড়াতাড়ি রবিন কে আটকাও
নাভিদ= সম্ভব না
জহির স্যার= কেন??
নাভিদ= ACCORDING TO SHARIFA, ROBIN IS SUPER FIRST.
এই কথা শুনে জহির স্যার নিজেই এক দৌড় দিয়ে প্রিন্সিপ্যাল এর রুমের সামনে গিয়ে থামে, দেখে রবিন প্রিন্সিপ্যাল এর রুম থেকে বের হচ্ছে।
রবিন= স্যার প্রিন্সিপ্যাল মেডাম আপনার লেটার পেয়ে মনে হয় খুব খুশি,
জহির স্যার= মনে হয়
রবিন কাঁদো কাঁদো গলায় বলে= উই মিস ইউ স্যার


 যহির স্যার প্রিন্সিপ্যাল এর রুমে প্রবেশ করে
মেডাম= আমি তোমার চিঠি পড়েছি,
জহির স্যার= সরি মেম
মেডাম= আরে নাহ, ঠিক আছে। কত কিছু লিখেছ চিঠির মধ্যে, হরিণীর মত টানা টানা চোখ আমার, দুধে আলতা গায়ের বরন, কমলার কোয়ার মত নরম ঠোঁট।
জহির স্যার= আ...না মানে
মেডাম= দুষ্ট ছেলে, আমি প্রথম থেকেই খেয়াল করেছি, তুমি আমার দিকে বাকা চোখে তাকাও। ইন্টারনেট এ কি সব হাভিজাবি পড়ে পড়ে বয়স্ক মহিলাদের দিকে নজর দাও। আমি সব জানি, আজকালকার ছেলেরা বয়স্ক মেয়েদের একটু বেশি পছন্দ করে। নটি বয়, যাও আজকে থেকে তুমি পার্মানেন্ট
জহির স্যার= ওকে মেডাম, থ্যাঙ্ক ইউ মেডাম।
মেডাম= পুস্পা, আমাকে বাসায় সবাই আদর করে পুস্পা বলে ডাকতো, তুমিও আমাকে আদ-----র করে পুস্পা বলে ডাকো
জহির স্যার= ওকে মেডাম আই মিন পুস্পা



 প্রিন্সিপাল মেডামের রুম থেকে বের হয়ে সোজা ক্লাস রুমে যায় জহির স্যার।
সবাই স্যার কে জিজ্ঞেস করে স্যার কি হল??
জহির স্যার= খুব বড় বাচা বেঁচে গিয়েছি, আজ থেকে আমি পার্মানেন্ট
শারিফা= কিভাবে সম্ভব হল
জহির স্যার= আসলে ভুল করে হালিমের চিঠি প্রিন্সিপ্যাল মেডামের কাছে চলে যায়। আর সেই চিঠি পড়েই প্রিন্সিপ্যাল মেডাম আমাকে পার্মানেন্ট করে দেয়
রাঁধা= এইটা তো স্যার খুব খুশির কথা
নাভিদ= এটা মোটেও খুশির কথা না
জহির স্যার= কেন নাভিদ??
নাভিদ= স্যার হালিমের চিঠি প্রিন্সিপ্যাল মেডামের কাছে, তার মানে আপনার চিঠি হালিমের গার্লফ্রেন্ড এর কাছে
শারিফা= ও মাই গড!!! আল্লাহ হালিমের আত্মাকে শান্তি দাও। সবাই বল আমীন 

এটা একটা প্রেমের কাহিনী ৫ম পর্ব 




ভালোবাসার গল্প, ভালবাসার গল্প, প্রেমের গল্প, valobashar golpo, premer golpo, love story

No comments:

Post a Comment

comment

Contact Us

Name

Email *

Message *