ভালোবাসা পাওয়ার চাইতে ভালোবাসা দেওয়াতেই বেশি আনন্দ।

Friday, January 25, 2019

সম্পর্ক গুলো ভালবাসার

love story, valobashar golpo, ভালোবাসার গল্প, প্রেমের গল্প, ভালবাসার গল্প
এত দিন বন্ধুদের থেকে শুধু রুম ডেট এর গল্প শুনেছি।সাথে অনেক ধৈর্য ধরেছি।এই পাপ কাজটা করবো না বলে।আজ কাল নিজেকে কন্ট্রোল রাখতে পারছিনা।নীলা কল দিলেই ঠুনকো কথা নিয়ে ঝগরা বাধাই।সব শেষে সেদিন রাত দশটার দিকে! নীলা জানতে চাইলো।
- আমার অদ্ভুত আচরনের কারন কি??
. আমি ভাঙা গলায় বলেছি,
- রুম ডেট করতে হবে। (বলার সময় অবশ্য কঠিন আকারে গলা ধরে আসছিলো)
. ওপাশ থেকে নীলার কোন সারা শব্দ পাচ্ছিনা।
কিছুক্ষন পর ফুপিয়ে কাঁন্নার শব্দ পেলাম।
আমার বিরক্ত লাগছে।
কঠিন গলায় বলে উঠলাম।
- ন্যাকামি বন্ধ করে, বলো করবে কি না?
. নীলা ফিস ফিস করে বলেছিলো
- তুমিতো এমন ছিলে না? কখনো তো এসব বলতে না। নিজেই তো বলেছিল বিয়ের আগে আমায় ছুয়েও দেখবে না। আজ কি হলো তোমার বলবে?
- কি হলো মানে?? আমার কিছু হয়নি। যদি ডেট করো তাহলে রিলেশন রাখবো। নয়তো এখানেই ব্রেকআপ।
-
ওপাশে মেয়েটার দু চোখ বয়ে অঝরে জল গড়িয়ে পড়ছে।
ফারাবীর এমন পরিবর্তন মেনে নিতে বেশ কষ্ট হচ্ছে।
-
অনেক ভেবে চিন্তে, নীলা রাজি হয়ে ফারাবির শর্তে।
-
ফারাবি বেশ খুশি মনেই ঘুমোতে যায়।
কিন্তু সারা রাত চোখের দু পাতা এক করতে পারেনি।
বার বার ভাবছে কাজটা কি মোটেও ঠিক হচ্ছে??
ভুল কিছু করছি না তো???
এপাশ ওপাশ করেই রাতটা কাটিয়ে ভোর হতে যাচ্ছিলো।
-
শেষ রাতের দিকে এক ভয়ানক শব্দে ঘুম ভেঙে যায় ফারাবির।
দরজার ওপাশে কেউ গুমড়িয়ে কাঁদছে বাবা বাবা বলে।
দরজায় খুব জোরে ধাক্কাচ্ছে।
অনেকটা লাফিয়ে উঠে ফারাবি।
-
বাহির থেকে কোন শব্দ আসছেনা এখন।
মনে হলো!
কিছু একটা উড়ে চলে গেল।
তবে রুমের চারপাশে একটু ঘুরে।
-
মিনিট পাঁচেক নিথরে বসে থাকে ফারাবি।
ঠিক পাঁচ মিনিট পর আবার দরজায় ধাক্কানোর শব্দ।
জোরে জোরে চিৎকার করে! মা কে ডেকে উঠে ফারাবি।
প্রায় দুমিনিট ডাকাডাকির পর বাবা উঠে আসে।
এমন শব্দের কথা বলার পরে।
চারিদিকে টর্চ লাইট দিয়ে ভাল ভাবে দেখে নেন তিনি।
নাহ্ কিছু নেই।
বলে শুতে যান তিন।
শীতের রাত, বাহিরে খুব বেশি ঠান্ডা। ফারাবি শীতে কাঁপছে।
-
দরজার ছিটকিনি ভাল ভাবে লক করে আবার বিছানায় গা এলিয়ে দেয় ফারাবি।
মোবাইল হাতলে দেখে দুইটা পঁচিশ বাজে।
-
আধা ঘন্টা এপাশ ওপাশ করতে করতে আবার ঘুমিয়ে যাবার উপক্রম।
-
এবার আর দরজা নয়।
তার আপন বোনকে কেউ হোটেলের নীরব রুমে একাকী কাছে পেতে বসেছে।
নিজের জীবনের চাইতে ছোট বোনটাকে বেশি ভালবাসে ফারাবি।
রুমের দরজা খুলে ছোট বোনের রুমের দরজার সামনে চলে যায় ফারাবি।
. এত রাতে নক করাটা বোধয় ঠিক হবেনা।
ঘুমোচ্ছে হয়তো।
তবুও মোনে মানে না।
দরজায় বেশ কয়বার ধাক্কা দিয়ে। ডাকতে থাকে মিতু, মিতু, ওই মিতু!!"
দরজা খোল।
বড় ভায়ের গলা শুনে ঘুম ঘুম চোখেই দরজা খুলে মিতু।
- কি হয়েছে ভাইয়া?
- তুই ঠিক আছিস বোন?
- হ্যাঁ তো। কেন বাজে স্বপ্ন দেখেছো বুঝি??? ( মিতু খুব ভাল করেই তার ভায়ের এই শেষ রাতে ডাকার কারনটা জানে।
একবার সকালে মিতুকে ভাইয়া স্কুলে যেত নিষেধ করেছিলো। কিন্তু মায়ের বকনিতে মিতু বাধ্য যেতে। কিছুক্ষন পর খবর আসে মিতুর হাত ভেঙে গেছে সিঁড়ি থেকে পড়ে। এরকম আরো বহু ঘটনা আছে)
-
ফারাবি মিতুর দিকে ভালো করে একবার দেখে নেয়। হ্যাঁ তার বোন ঠিক আছে।
কিন্তু মিতুকে একা রেখ যেত ভয় হচ্ছে তার।
আজ রাতটা ভাই বোন এক সাথে ঘুমিয়ে পার করে।
ভোর বেলায় ঠান্ডা পানি দিয়ে মিতু তার ভায়ের ঘুম ভাঙায়।
-
মিতুকে বলেছে আজ তার ভাবির সাথে পরিচয় করিয়ে দিবে।
শুনে মিতুও বেশ খুশি।
তার ভাইয়া যে প্রেম করে এটা তার অবশ্য অজানা নয়।
-
নীলা রাতে একটুও ঘুমাতে পারেনি।
ফারাবির সাথে যা করতে যাচ্ছে তা ঠিক কি ভুল সেটা নিয়ে ভাবছে সারাটা রাত।
একবার ভাবে সম্পর্ক শেষ করবে।
আবার ভাবে নাহ্ অল্প কিছু সময়ই তো।
ফারাবিকে সে অনেক বেশি ভালবেসে ফেলছে। তাকে ছাড়া যে আমি অচল।
. আবার ভাবছে এত দিনের পরিচয়! এখনো চিন্তে পারলাম না ফারাবিকে???
ও এমন??
সব শেষে নিজের কুমারিত্ব বিষর্জন দিয়ে প্রমান দিতে হবে???
-
হোটেলে যে রুম বুক করেছিলো ফারাবি।
সেটা ক্যান্সেল করে দেয়।
নীলাকে কল দিয়ে একটু আগেই বেরুতে বলে।
-
সবকিছুর জন্যই প্রস্তুতি নিয়ে নীলা কলেজ গেটের সামনে আসে।
ফারাবিকে একা নয় সাথে মিতুকে দেখে অনেকটা খুশি হয় নীলা।
-
ছোট বোনের সামনেই তার ভুলের জন্য ক্ষমা চায় ফারাবি।
নীলা এই প্রথম তিন বছরের রিলেশনে ফারাবিকে জরিয়ে ধরে শক্ত করে।
ছোট বোনের সামনে এবার লজ্জায় পড়ে যায় ফারাবি।
-
মিতু মিট মিট করে হাঁসছে।
নীলা মিতুর দিকে তাকিয়ে ছেরে দেয় ফারাবিকে।
তিন জন এক সাথে হেঁসে উঠে।
সারা দিন নানা জায়গায় ঘোরা ঘুরি করে তিন জন।
-
রাত আটটার দিকে বাসায় ফিরে মিতু ফারাবির কাছে আলাদা ট্রিট চায়।
নয়তো আম্মুকে বলে দিবে।
অবস্য আম্মুর ভয় না দেখালেও পারতো মিতু।
আজ পর্যন্ত মিতুর প্রায় সব ইচ্ছেই পূরন করেছে ফারাবি।
রুমের বাহিরে যেতে যেতে বলে! দেখ টেবিলের উপরে আছে।
মিতু প্যাকেট খুলে, পাগল ভাইয়া আমার, বলে উঠে।
মিতুর প্রিয় চকলেট। কাঁচের চুড়ি। আর একটা হিজাব।
-
মিতু ফারাবির রুম থেকে বেরুতে যাবে ঠিক তখনি ফারাবির ফোনটা বেজে উঠে।
নীলা কল দিয়েছে।
ফোন রিসিভ করেই মিতু বলে...
- ভাবি, আমার ভাইয়াটাকে কি সব সময় এভাবেই জ্বালানো হয়???
- ধুর কি বলনা। গিফট গুলা পছন্দ হয়েছে তোমার???
- অনেক বেশি হইছে
- তোমার ভাইয়াকে দাও তো!
-
ফারাবি আর নীলা কথা বলছে।
মিতু পাশে দ্বাড়িয়ে আছে।
মাঝে মাঝে ফারাবির কানে ফু দিচ্ছে,,, শরিরের নানা জায়গায় চিমটি কাটছে।
ফারাবি চুল গুলো এলোমেলো করে দিচ্ছে মিতুর..... মিতু রেগে যাচ্ছে.... ভাই বোনের ভালবাসাটাও খুনসুটি অবদ্ধ হচ্ছে...
সময়টা যেন থমকে গেছে.....

No comments:

Post a Comment

comment

Contact Us

Name

Email *

Message *