ভালোবাসা পাওয়ার চাইতে ভালোবাসা দেওয়াতেই বেশি আনন্দ।

Tuesday, December 27, 2016

পাপের ফল তিক্ত

ভালবাসার গল্প, প্রেমের গল্প, ভালোবাসার গল্প,
ছেলেটা এখন আগের মত কারোর সাথে মিশে না, কথা ও কম বলে। এখন আর ওকে হাসিখুশীতে দেখা যায় না। সব সময় দরজা বন্ধ করে কি যেন গুন গুন করে আল্লাহি জানেন। কয়েকদিন আগে আমার এক বন্ধুর থেকে জানতে পারলাম ও এখন মানসিক রুগী। না তখন আমি মোটেও বিস্মিত হয়নি। আমি জানতাম এমন কিছু একটা ওর সাথে হবেই। তবুও একটা দীর্ঘশ্বাস নিলাম কারণ আমি তা'কে অনেক বুঝিয়েছিলাম পাপ কাজ থেকে বিরত থাকতে, না ছেলেটা আমার কোনো কথাই শুনেনি। অনেকবার বলেছিলাম কারোর মন নিয়ে খেলা করিস না, কারোর মনে আঘাত করিস না। না হয় একদিন এর ফল ত'কে ভোগ করতে হবে। এতকিছু বুঝিয়ে বলার পরও আমার কথায় কোনো সায় দেয়নি।  পাপ বাপকে ও ছাড় দেয় না। বান্দার মন ভাঙা না'কি মসজিদ ভাঙার সমান। আর মসজিদ হলো সবচেয়ে উত্তম পবিত্র স্থান। তার সাথে মনের তুলনা করা মানে মন তার মত উত্তম, এই কথাগুলি অনেকবার বুঝিয়েছিলাম কিন্তু আমার কথা ও বুঝেনি।

প্রত্যেকটা মেয়ে যে ভুল কারোর প্রেমে পড়ে চিল্লানি দিয়ে বলে ছেলেরা খারাপ এটা কোনো নতুন কথা না।
প্রত্যেক মেয়েই খারাপ কোনো ছেলের প্রেমে পড়ে ধোকা নামক জিনিসটার সাথে পরিচিত হয়। এই পোষ্টটাই তার বাস্তব প্রমাণ। ফেবুতে কিছু ছেলে মেয়ের ধান্দাই থাকে একটার পর আরেকটার সাথে টাইম পাস করা।  এটা'কে কিছু নির্বুদ মানুষ প্রেম ভালবাসা বলে পবিত্র বন্ধনের সাথে কলঙ্ক লেপন করে। একটা ছেলে মেয়ে কেউ কাউকে চিনেনা জানেনা কয়েকদিন মেসেজে কথা বললো পিকচার আদান প্রদান করল কয়েক ঘন্টা ফোনে কথা বললো আর হুট করেই প্রপোজ করে বললো তোমায় ভালবাসি তার পর শুরু হয়ে গেল লাভস্টোরি, অতঃপর রিলেশনটা তিনদিনের মাথায় যেতে না যেতেই ব্রেকাপ নামক ভাইরাস রুগে উভয়ে আক্রান্ত হলো। শেষপর্যন্ত উভয়ের মধ্যে বিচ্ছেদ হলো আর মাথায় চুলকাতে চুলকাতে বললো ফেবু মানেই খারাপ।  আপনার যুক্তির সাথে এখন কেউ যুক্তি দিয়েও পারেনা। তবুও মুখে স্বীকার করতে চাননা আপনি ভূল মানুষের প্রেমে পড়েছেন।

ছেলেটা আমার বন্ধুও ছিলো বটে কিন্তু কেউ খারাপ কাজ করবে আর আমি হাত মুখ সব গুটিয়ে বসে বসে ঝিমাব এটা কোনো যুক্তিসম্মত কথা হতে পারে না। কেউ খারাপ কাজ করেছে আপনি তা'কে বাধা দিবেন, অথবা বুঝিয়ে বলবেন এটা ভালো না এভাবে করো না। তার পরও প্রতিবাদ করেন। আমিও প্রতিবাদ করেছি ওর সাথে কিন্তু সে আমার কথার কোনো মূল্য দেয়নি। তার বদ অভ্যাস হলো মেয়েদের নিয়ে টাইমপাস করা, তার ফেবু আইডিতে দৈনিক ১০+মেসেজ জমা হয়ে থাকত, এর মধ্যে একটা ও যে ছেলেনা আমার ভালো করেই জানা আছে। একদিন আমি তার হোয়ার্টসাপ এ ক্লিক করে কয়েকটা একাউন্ট চেক করেছিলাম,  নিজের চক্ষুকে বিশ্বাস করতে পারলাম না চক্ষু যা দেখলো তা কি সত্যি? যদি সত্যি হয় তাহলে একটা ছেলে কি পরিমাণের নোংরা হতে পারে সেটাই দেখলাম মাত্র

সারাদিন মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত থাকা একটা মেয়ে আইডি পেলেই মেসেজ দেয়া,বন্ধু বানানো রশের গল্প করা, অতঃপর ভালবাসার অভিনয় করে তাকে ধোকা দেওয়া এটাই তার মৌলিক কাজ ছিল, শুধু তাতে ও থেমে থাকেনি মেয়েটার দূর্বল পন্থাটা কাজে লাগিয়ে নেগেটিভ ছবি চাওয়া। এটাও তার কাজের অন্তর্ভুক্ত ছিল।

 কিছুদিন পর এই মেয়ে শেষ আরেকটার সাথে নতুন করে ভালবাসার অভিনয় শুরু করা। জানিনা তখন প্রথম মেয়েটি কিভাবে নিজেকে সান্ত্বনা দিত। হয়ত আবদ্ধ ঘরে নিজেকে আগলিয়ে রেখে বলতো কি অপরাধ ছিল আমার। হয়তো নির্ঘুম রাত কাটানোর ফলে চোখের নিচে কালো দাগের রেখা স্পষ্ট ভেসে উঠতো। হয়তো গভীর রাতে মুখে বালিশ চাপা দিয়ে কেঁদে কেঁদে বলত তোমাকে তো মনে প্রাণে ভালবেসে ছিলাম। তাহলে কেন আমার সাথে এমন মিথ্যে ছলনা করলে। আর ঐদিকে ছেলেটা নতুন আরেকজন কে জান জানু বলে দাত কেলাতে কেলাতে বলছে এটাই আমার প্রথম প্রেম দেখবা জান তোমাকে কখনো কষ্ট দিবো না।

শুনেছিলাম কয়েকদিন আগে ও না'কি নতুন আরেকটা মেয়ের প্রেমে পড়েছে। মেয়েটা দেখতে না'কি বাকিগুলির চেয়ে বেশ সুন্দরী। আর ও সাফ বলে দিয়েছে এই মেয়েকেই সে ভালবাসে আর এই মেয়েই তার সব। নিজের মনে অনেক কৌতুহল সৃষ্টি হলো। মনে মনে বললাম এবার হয়ত ছাড় পাবেনা।
এই কয়েকদিন ওকে বেশ আনন্দে থাকতে দেখলাম। সবকিছুতেই কেমন টাট্টা করত।
এটা যে মূছে যাবে তা কে জানত। বেশ কয়েকদিন থেকে ওকে দেখছিনা খেলায়, বাহিরে মোবাইল নিয়ে টিপতে ও দেখিনা। মনে মনে ভাবলাম হয়ত কোথাও বেরাতে গেছে তাই দেখছিনা। একদিন আমার আরেক বন্ধুকে জিজ্ঞাসা করলাম ওর কথা। তখন তার থেকে জানতে পারলাম ওর রিলেশন ব্রেকাপ হয়েছে তাই একটু বেশী ভেঙে পড়েছে। আমি তেমন আর বেশী মনে নিলাম না ভাবলাম এমনিতেই ঠিক হয়ে যাবে।

এক গভীর রাতে আমি বাড়িতে ফিরছি তখন দেখলাম ও দাঁড়িয়ে সিগারেট টানতেছে। একটু অবাক হলাম কারণ আমি জানি ও সিগারেট খায়না। কাছে গিয়ে একটু ধমকের শুরে বললাম এই তুই সিগারেট কবে থেকে খাওয়া শুরু করলি? না কোনো উত্তর দিচ্ছে না অবিরত টেনেই যাচ্ছে। আবার বললাম সিগারেট খাওয়া শুরু করলি কবে থেকে? না কোনো উত্তর নেই। একটু ধাক্কা দিয়ে বললাম কি'রে কথা কি কানে যায় না? এমনিতেই বুকে ঝাঁপিয়ে পরে মেয়েদের মত কাঁদতে লাগলো। আমি জানতাম ওর ক্রন্দনের পিছনে কি কারণ আছে। মনে মনে ভাবলাম কেউ অভিনয় করে তো এইভাবে কাঁদেনা। মাথায় সান্ত্বনার পরশ দিয়ে বললাম কি হয়েছে আমায় একটু বল। তখন বললো তুই তো জানিস আমি মেয়েটাকে ভীষন ভালবাসি, কিন্তু মেয়েটা আমার সাথে আর থাকতে চায়না, ব্রেকাপ নিছে। ওর নাকি হবু স্বামী আছে কানাডায় থাকে।
আমি ওকে ছাড়া বাচঁবো না দুস্ত। ওর কথাগুলি শুনি আমি কিছুক্ষণ নিরব হয়ে থাকলাম। কারোর কষ্টের সময় আমি আবার কিছু বলে তার কষ্টকে বৃদ্ধি করতে চাইনা। তাই তাকে কোনোমতে বুঝিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসলাম। বেশ কিছুদিন থেকে এখন আর বাহিরে ও বের হয় না। আমি ও অন্যত্র কোথাও পাড়ি দিলাম। তাই আর কোনো যোগাযোগ রাখা হয়ে উঠেনি আমার।

পরিশেষে বলি কাউকে ধোঁকা দিবেন না। কারোর মনকে খেলনার পাত্র ভেবে খেলা করবেন না, অন্যথায় আপনি নিজেই একদিন খেলনার পাত্র হবেন। দয়া করে কাউকে ধোকা দিবেন না হোক সেটা ফেবুতে অথবা বাস্তব জীবনে। কাউকে অবহেলা করবেন না। আপনার একটু অবহেলার ফলে পাশের মানুষটি কতটুকু ভেঙে পরে তা উপলব্ধি করতে পারবেন। কাউকে যদি আপনার ভাল লাগেনা তাহলে তা'কে সরাসরি বলে দেন,তবুও তার সাথে ভালবাসার নামে অভিনয় করা থেকে বিরত থাকুন। ভালবাসার নামক পবিত্র বন্ধনের অপমান করবেন না। যুগ যুগ ধরে বেঁচে থাকুক প্রত্যেক মানুষের মনে উদিত ভালবাসাগুলা।ভালবাসতে শিখুক পাশের মানুষটিকে।শিরায় শিরায় পৌছে দিক ভালবাসার ছোঁয়া।

No comments:

Post a Comment

comment

Contact Us

Name

Email *

Message *