ভালোবাসা পাওয়ার চাইতে ভালোবাসা দেওয়াতেই বেশি আনন্দ।

Tuesday, April 8, 2025

শেষ ট্রেনের যাত্রী

ভালোবাসার গল্প, ভালবাসার গল্প, প্রেমের গল্প, valobashar golpo, premer golpo, love story

ঢাকার কমলাপুর স্টেশন। রাত ১১টা। শেষ ট্রেন ছাড়ার অপেক্ষা করছে। প্ল্যাটফর্মে অল্প কজন মানুষ। তাদের মধ্যেই দাঁড়িয়ে আছে আয়েশা—চোখে ক্লান্তি, মুখে চিন্তার ছাপ।

রায়হান হঠাৎই তাকে দেখে ফেলল। তারা আগে একে অপরকে চিনত, কিন্তু বছরখানেক দেখা নেই। একসময় বিশ্ববিদ্যালয়ে একসঙ্গে পড়ত, কথা হতো অনেক, কিন্তু কখন যেন দূরত্ব তৈরি হয়ে গিয়েছিল।

রায়হান ধীরে ধীরে এগিয়ে গেল আয়েশার দিকে।

— “আয়েশা?”
আয়েশা তাকিয়ে কিছুক্ষণ চুপ থাকলো। তারপর হালকা হাসল।
— “তুমি এখানে?”

— “হ্যাঁ, অফিস থেকে ফিরছি। আর তুমি?”

আয়েশা চোখ নিচু করে বলল,
— “চলেছি...সিলেট...চিরদিনের মতো।”

রায়হান অবাক হল,
— “চিরদিনের মতো মানে?”

— “আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে। আগামী সপ্তাহেই। তাই শহরটা, সবকিছু ছেড়ে চলে যাচ্ছি।”

কিছুক্ষণের জন্য নীরবতা। প্ল্যাটফর্মের বাতাসটা যেন হঠাৎ ভারি হয়ে উঠল।

রায়হান ধীরে ধীরে বলল,
— “তুমি জানো, আমি আজও তোমার জন্য অপেক্ষা করি?”

আয়েশা বিস্মিত চোখে তাকাল।
— “তুমি তো কিছুই বলো নি...”

— “তুমি চলে গিয়েছিলে হঠাৎ করেই। আর আমি ভাবতাম, হয়তো ভুলেই গিয়েছো আমাকে।”

আয়েশার চোখে জল টলমল করে উঠল।
— “আমি কখনো ভুলিনি রায়হান। কিন্তু সময় আমাদের সুযোগ দেয়নি।”

এদিকে ট্রেন ঢুকছে প্ল্যাটফর্মে। সময় যেন দ্রুত পালিয়ে যাচ্ছে তাদের হাতের মুঠো থেকে।

রায়হান কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল,
— “তোমার যদি মনে হয়, এই বিয়েতে তোমার মন নেই, তাহলে থেকো। আমরা আবার শুরু করতে পারি। কিন্তু যদি মনে হয়, তোমার ভালোবাসা এখন আর আমার জন্য নেই, তাহলে চলে যাও। আমি আর থামাবো না।”

আয়েশা তাকিয়ে রইল তার চোখে। ট্রেনের হুইসেল বাজলো। সে এক পা বাড়াল, আবার থেমে গেল।

— “আমি কোথাও যাচ্ছি না রায়হান,” আয়েশা ধীরে বলল। “এ শহরেই থেকে যেতে চাই...তোমার সাথে।”

রায়হানের মুখে হাসি ফুটে উঠল। ট্রেন ছেড়ে গেল—তাদের পেছনে ফেলে, সময়ের এক নতুন অধ্যায়ের দিকে।

No comments:

Post a Comment

comment

Contact Us

Name

Email *

Message *