ভালোবাসা পাওয়ার চাইতে ভালোবাসা দেওয়াতেই বেশি আনন্দ।

Thursday, April 3, 2025

বয় স্টোরি

ভালোবাসার গল্প, ভালবাসার গল্প, প্রেমের গল্প, valobashar golpo, premer golpo, love story

‘তুই একটা হিজড়া’।

জ্যাকব লিলিল দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে, ক্লাসে সবার সামনে লিলি কথাটা কিভাবে বলতে পারে।  শিক্ষক নেই, তাই সবাই যে যার মতো গোল হয়ে গল্প করছে। এমন সময় লিলি জ্যাকবকে কথাটা হঠাত করে বলে উঠে। জ্যাকবও লিলিকে বলে ‘বাথরুমে চল, তোকে দেখাই, এক ঘন্টার আগে ছাড়মু না’।

‘এতো লুচ্চামি করস দেখেই এখন পর্যন্ত একটা গার্লফ্রেন্ড জোগাড় করতে পারলিনা।‘ 

‘তো তুই আমার গার্লফ্রেন্ড হ।

‘মরে গেলেও তোর মতো লুচ্চার সাথে রিলেশন করব না।‘

‘আর আমিও তোর মতো কুৎসিত মেয়ের সাথে কখনো রিলেশন করব না।

‘আমি কুৎসিত! আমার মতো সুন্দরী এই কলেজে একটা আছে? আমাকে দেখেই কত ছেলেরা তাকিয়ে থাকে।

‘তুই লেংটা হয়ে থাকলেও আমি তোর দিকে তাকাবোনা। 

‘তুই কিন্তু আমাকে অপমান করছিস।‘

‘অপমান তাকে করে যার মান-সম্মান থাকে, তোর কোনো মানসম্মান আছে?

রাগে লিলির গাল লাল হয়ে যায়। লিলি দেখতে খুবই সুন্দরি, খুবি মিষ্টি চেহারার একটা মেয়ে, গায়ের রঙ তুষারের মত সাদা, যখন রাগ করে তখন তার গাল রক্তের মত লাল হয়ে যায়। রাগে সাপের মত ফোসফোস করতে থাকে। ব্যাগটা গুছিয়ে জুলির পাশে গিয়ে ধপাস করে বসে।

 

লিলি আর জ্যাকব প্রায়ই এভাবে কথায় কথায় ঝগড়া লাগে। আবার পরের দিন তাদের সে কথা মনেও থাকেনা। যেন কিছুই হয়নি। একসাথে চলাফেরা, ওঠাবসা, ঘুরাঘুরি। ওদের বন্ধুত্ব কলেজের সবাই যানে।সবাই ভাবে ওরা কাপল, কিন্তু জ্যাকব আর লিলি বলে ওরা জাস্ট ফ্রেন্ড। কাকতালীয় ভাবে ওরা দুজনেই ক্লাসের সব থেকে মেধাবী স্টুডেন্ট।

 

এমন সময় ক্লাসে সোফিয়া ম্যডাম প্রবেশ করে। সোফিয়া ম্যাডাম তাদের বায়োলজি টিচার এবং ক্লাস টিচার। সোফিয়া ম্যাডাম ক্লাসে প্রবেশের সাথে সাথে সবাই দাঁড়িয়ে যায়। সোফিয়া ম্যাডাম সবাইকে বসতে বলে হাজিরা খাতা খুলে ডেস্কে রাখে, কলম খুজতে খুজতে ব্যাগে হাত দিয়ে দেখে কলম আনতে ভুলে গেছেন। লিলিকে বলে ‘লিলি একটা কলম দাওতো।‘ লিলি বসা থেকে উঠে ডেস্কের উপর একটা কলম রেখে আবার তার জায়গায় গিয়ে বসে। লিলি জুলির সাথে একেবারে পিছনের বেঞ্চে বসেছে।

 

লিলি আর জুলি ছোটবেলার বান্ধবি। তারা সব কিইছু একে  অপরের সাথে শেয়ার করে। কিন্তু দুই জনের স্বভাব-বৈশিষ্ট্য একেবারে ভিন্ন। লিলি ক্লাসের সব থেকে মেধাবী স্টুডেন্ট, এমনকি শিক্ষকরা মনে করে লিলি পুরো কলেজের সব থেকে মেধাবী স্টুডেন্ট অপর দিকে জুলির মাথায় পড়ালেখা ঢুকেনা বললেই চলে। একেবারেই ফাকিবাজ স্টুডেন্ট।এরা দুজন যখন একসাথে বসে তখন সোফিয়া ম্যাডামের কেন জানি একটু রাগ হয়। তাই তিনি লিলিকে সামনের বেঞ্চে এসে বসতে বলেন।

 

লিলিও সোফিয়া মেডামকে অনেক ভালোবাসে ও সম্মান করে। সোফিয়া মেডামের সব কথা লিলি মেন চলে, ভাবখানা এমন যেন সোফিয়া মেডাম লিলির মেন্টর। লিলি একেবারে সামনের বেঞ্চে গিয়ে বসে, তার পাশের সিটটা খালি থাকে। পেছনের সিটে জ্যাকব। জ্যাকব লিলির কানে কানে বলে ‘কিরে সোফিয়া ম্যাডামের চামচা।‘ লিলি জ্যাকবকে একটা ধাক্কা দেয়। জ্যাকব সোজা হয়ে বসে পরে।

 

সোফিয়া ম্যাডাম প্রতিদিনের মত এটেন্ডেন্স নিতে শুরু করে। একে একে সবাই এটেন্ডেন্স দেয়, প্রতিদিনের মত কয়েকজন অনুপস্থিত থাকে। এটেন্ডেন্স নেয়া শেষে একটা নামে গিয়ে থেমে যায়। ছেলেটার নাম আলি, কয়েকদিন হলো নতুন এডমিশন নিয়েছে, কিন্তু এখন পর্যন্ত একদিনও ক্লাসে আসেনি। সোফিয়া মেডাম জিজ্ঞাসা করল, ‘তোমরা কেউ আলিকে চিন?’ সবাই একে অপরের দিকে তাকায়, লিলি মনে মনে ভাবে ‘এই নামে তো আমাদের ক্লাসে কেউ নেই’, সোফিয়া ম্যাডাম আবার বলে, ‘নতুন এডমিশন নিয়েছে, কেউই চেননা?’ সবাই নিরব থাকে। নিরবতা দেখে সোফিয়া ম্যডাম বলে, ‘ঠিকাছে, বাদ দাও, চল ক্লাসে মনোযোগ দেই।‘

 

সোফিয়া ম্যাডাম ক্লাস নিতে আরম্ভ করে, মানব প্রজনন অঙ্গ নিয়ে আলোচনা করতে থাকে। এক পর্যায়ে জ্যাকব দাঁড়িয়ে বলে, ‘ম্যাডাম! বিষয়টা আমার মাথায় একেবারেই ঢুকছেনা, আপনি এটা একটু প্র্যাকটিক্যাল হাতে কলমে বুঝিয়ে দিতে পারবেন?’ সবাই জ্যাকবের কথায় হাসতে থাকে। সোফিয়া ম্যডাম জ্যাকবের ডাবল মিনিং কথায় বিব্রত বোধ করে। লিলি জ্যাকবকে আসতে আসতে নিচু গলায় বলে, ‘তোর কি টিচারদের বিরক্ত না করলে ভালো লাগেনা?’ এমন সময় ক্লাসের দরজার সামনে এসে দাঁড়ায় আলি। সোফিয়া ম্যাডামকে বলে, ‘ম্যাম আমি কি ভিতরে আসতে পারি?’,

‘তুমি কি এই ক্লাসের?’

‘জি ম্যাম’।

‘নাম কী?’

‘আলি’

‘ও তুমিই তাহলে নতুন স্টুডেন্ট!’

‘জি ম্যাম’

‘আসো, ভিতরে আসো।‘

আলি সোজা গিয়ে লিলির পাশে বসে।

 

আলির পাশে বসাটা লিলি একদমই পছন্দ করেনি।আসলে আলির আউটলুক দেখতে অতোটা আকর্ষনীয় নয়, সাধারণ টি-শার্ট আর ডেনিম, ডিসেন্ট হেয়ার স্টাইল আর সাদামাটা ভাব দেখে আলিকে দেখতে একেবারেই একজন সাধারণ মানুষ, একজন এভারেজ পার্সন। যার প্রতি কখনোই কোনো মেয়ে দুর্বলতা প্রকাশ করেনা লিলি আলির দিকে তাকিয়ে একটা বিরক্তিকর ভাব প্রকাশ করে, আলি ঠোট সামান্য বাকা করে একটা মৃদু হাসি দিয়ে সামনের দিকে তাকায়। ক্লাসের ঘন্টা বাজার সাথে সাথে লিলি উঠে গিয়ে আবার জুলির পাশে গিয়ে বসে।

জুলি বলে ‘কিরে আবার আসলি কেন? ম্যাম দেখলে আমাকে খুন করে ফেলবে। তুই এখান থেকে যা ভাই।‘

‘আরে দেখছিস না কি একটা ক্ষ্যাত পাশে এসে বসছে। ... 

No comments:

Post a Comment

comment

Contact Us

Name

Email *

Message *